• শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন

আরও ১০ মডেলের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ

Reporter Name / ১০৭ Time View
Update : বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে লেট নাইট পার্টি করে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করা আরও ১০-১২ জন মডেলের সন্ধান মিলেছে। তারা দু’একটি বিজ্ঞাপন ও ইউটিউবভিত্তিক নাটকে অভিনয় করে নিজেদের সামান্য পরিচিত করে ব্ল্যাকমেইলিংয়ে নামে। নিজেদের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুবই সক্রিয়। নিজেদের মধ্যে একটি চক্র গড়ে তুলে এসব মডেলরা ব্ল্যাকমেইলিং করে ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা।

সম্প্রতি এই চক্রের দুই সদস্য মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকেই এসব তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, চক্রের অধিকাংশ সদস্য ঢাকার বাইরের নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তারা মডেল হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে রাজধানীতে আসেন। ছোট কয়েকটি বিজ্ঞাপনে কাজ করার পর নিজেদের মডেল হিসেবে তেমন প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি । আবার অনেকে ইউটিউবভিত্তিক কয়েকটি নাটকে অভিনয় করে নিজেদের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। পরে এমন ৮-১০ জন কথিত মডেল একত্রে একটি চক্র গড়ে তোলেন। যার অন্যতম সদস্য ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ।

আরও জানা যায়, এ চক্রের সদস্যরা বিজ্ঞাপন ও নাটকে কাজের সুবাদে রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে পার্টিতে যেতেন। সেখানে গিয়ে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতেন। ধনীর দুলালদের সঙ্গে সখ্যতার পর অনেক ক্ষেত্রে পার্টির পর তাদের সঙ্গে রাত কাটাতেন। লিপ্ত হতেন অসামাজিক কাজে। কথিত এসব মডেলদের মধ্যে অনেকে লেট নাইট পার্টির দৃশ্য মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করতেন।

পার্টি শেষ হওয়ার কয়েক দিন পরে এসব ধারণ করা ভিডিও এসব ধনীর দুলালদের পাঠিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করতেন চক্রটির সদস্যরা। এদের মধ্যে অনেকেই নিজদের মান-সম্মান ও সামাজিক মর্যাদার ভয়ে চক্রটিকে টাকা দিয়ে ভিডিও ডিলিট করাতেন। আর যারা টাকা দিতে রাজি হতেন না তাদের পরিবারের লোকজনের কাছে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিত। বাধ্য হয়ে টাকা দিতেন অনেকে।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের মোবাইল পরীক্ষা করে এমনই কয়েকটি ভিডিও পাওয়া গেছে। এসব ভিডিও দিয়েই মূলত ব্ল্যাকমেইল করা হতো।

ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলের বারে কিংবা পার্টি সেন্টারে এসব মডেলদের নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই লেট নাইট পার্টি হতো। এসব পার্টিতে সমাজের বিত্তশালী পরিবারের সদস্যরা আসতেন। তারা মদ্যপান ও নাচ-গান করে রাত কাটাতেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ চক্রের সঙ্গে নিয়মিত লেট নাইট পার্টিতে যেতেন এমন ১০ ধনীর দুলালকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলেও তাদের কড়া নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ।

মডেল চক্রের বিষয়ে ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, এমন একটি চক্র রাজধানীতে সক্রিয় আছে জানতে পেরে তারা বারিধারা থেকে পিয়াসা ও মোহাম্মদপুর থেকে মৌকে গ্রেফতার করেন। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের বিষয়ে অনেক তথ্যই তারা জানতে পেরেছেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে তারা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গত গত রোববার রাতে রাজধানীর বারিধারায় থেকে পিয়াসা ও মোহাম্মদপুর থেকে মৌকে গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারের সময় দুজনের কাছ থেকে মাদক ও ইয়াবা জব্দ করা হয়। পরে গুলশান থানায় পিয়াসার বিরুদ্ধে ও মোহাম্মদপুর থানায় মৌয়ের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। পরে সোমবার তাদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত পিয়াসা ও মৌকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরবিসি/০৪ আগস্ট/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category