সাপাহার প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে কবিরাজের ভুল চিকিৎসায় আল আমিন (৭) নামে এক শিশুর ডান হাত হারাতে বসেছে। শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ভুক্তভোগী শিশুর অবিভাকরা গত শুক্রবার উপজেলার হাঁপানিয়া বিরামপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আল আমিন খেলা করার জন্য বাড়ীর পাশে ছোট একটি আমগাছে ওঠে। হঠাৎ গাছ থেকে পড়ে তার ডান হাতের বাহুতে আঘাত লাগে। তারা জানতে পারেন, ছেলের হাত ভেঙ্গে গেছে।
এসময় তাদের আত্মীয় উপজেলার আন্ধারদিঘী গ্রামের হাবিবুরে ছেলে আব্দুল আলীমের পরামর্শে ধামইরহাট উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের জমশেদ কবিরাজের নিকট নিয়ে যান। কবিরাজ জমশেদ আলী শিশুর হাতে বাঁশের চাটাই বেঁধে দেয়।
পরবর্তী সময়ে বাহুতে ফোস্কা পড়লে শিশুর বাবা মা আবার ওই কথিত কবিরাজের সাথে যোগযোগ করলে কবিরাজ ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন। এমতাবস্থায় রবিবারে দুপুরে ওই শিশুকে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে অবিভাবকরা। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হাতের অবস্থা দেখে তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
কথিত কবিরাজ জমশেদ আলী বিষয়টি স্বীকার করেন। ওই শিশুর হাত ভালো হয়ে যাবে বলেও দাবী করেন। এরকম অনেক রোগী তার কাছে সুস্থ হয়েছে বলেও তিনি জানান। কবিরাজি বিষয়ে লাইসেন্স বা কোন প্রশিক্ষণ নেই বলে তিনি স্বীকার করেন।
সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও হাড়জোড়, বাতব্যাথা বিশেষজ্ঞ সার্জন মোর্শেদ মঞ্জুর কবির লিটন জানান, শিশুটির হাতের অবস্থা খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। এ অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দিচ্ছি। শিশুর হাত রাখবে বা কেটে ফেলবে সে সিদ্ধান্ত মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ নিবেন। এছাড়াও ভুয়া ওই কবিরাজকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবী জানান তিনি।
সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, এ যুগে মানুষের কাছে এমনটা আশা করা যায় না। শিশুর অবিভাবকরা যদি তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখাতেন তাহলে খুব সহজেই এটি রিকভারি হওয়া সম্ভব ছিলো। কিন্তু বর্তমানে শিশুর হাতের অবস্থা খুব খারাপ। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
আরবিসি/০২ আগস্ট/ রোজি