আরবিসি ডেস্ক: রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার মাইক্রপ্যাথ ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। নিহত প্রসূতি সুখী খাতুনের ছোট ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে রাজশাহী চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে মামলাটির তদন্তভার দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শারমীন সেলিনা সুলতানা (৫০), এ্যানেসথেসিয়ালোজিস্ট ডা. রাশিদুল, মাইক্রোপ্যাথ ক্লিনিকের ম্যানেজার নগরীর রাজপাড়া থানার দাশপুকুর এলাকার বাবর আলীর ছেলে বুলবুল (৪০), ওটি বয়/ দালাল রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামের মামুন (৩০), পবার কাটাখালি এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে খালেক দালাল (৩০)।
মামলার বাদী রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার গোলাবাড়ী গ্রামের মুনজিলার ছেলে মিজানুর রহমান জানান, আসামীরা তাদের দায়িত্বে অবহেলা ও সাবধানতা অবলম্বন না করে তাড়াহুড়া করে ভুল অপারেশন ও ওষুধ প্রয়োগ করার কারণে তার বড়বোন সুখী খাতুন ও তার নবজাতক ভাগিনা মারা যান।
দায়িত্বে চরম অবহেলা, গ্রামের সাধারণ রোগি হিসেবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য এবং বেপরোয়াভাবে চিকিৎসার নামে অর্থ উপার্জনের কারণেই অকালে প্রাণ দুটো ঝরেছে। তার বোন জামাই মানসিকভাবে অসুস্থ সে কারণে তিনি মামলার বাদী হয়েছেন বলে মিজানুর রজমান আরো জানান।
ঘটনার একমাস পরে মামলা বিষয়ে তিনি জানান, বড় বোন ও ভাগিনার মৃত্যুতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। সেই সঙ্গে চলমান লকডাউনের কারণে সবকিছু বন্ধ ছিল। লকডাউন শিথিল হওয়ার দিনই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা দায়ের করার পরে বিচারক মামলাটি আমলে নেন। বিচারক মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে। আগামী ১০ অক্টোবর মামলাটির তারিখ ধার্য্য করেছেন বিচারক।
উল্লেখ্য, মাইক্রোপ্যাথ ক্লিনিকে সিজার করাতে গিয়ে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি সুখী খাতুন ও তার নবজাতকের মৃত্যু হয়। শুক্রবার (১১ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মাইক্রোপ্যাথ ক্লিনিকের দালালরা ওই প্রসূতিকে সিজার করানোর কথা বলে মাইক্রোপ্যাথ ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ওই দিনই সন্ধ্যার দিকে প্রসূতি সুখীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়।
সিজারিয়ান অপারেশন করেন গাইনি ও প্রসূতি চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। কিন্তু অপারেশনের পরে প্রসূতির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। এতে সুখীর মৃত্যু হয়। এমনকি শিশুটিও অযত্নে মারা যায়। ঘটনার পরে চিকিৎসক শারমিন সুলতানা ক্লিনিক ছেড়ে পালিয়ে যান। একই সঙ্গে ওই ক্লিনিকের মালিকসহ নার্সরা পালিয়ে যান।
আরবিসি/১৫ জুলাই/ রোজি