আরবিসি ডেস্ক : কুষ্টিয়া করোনা হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৪ জন করোনায় এবং ৩ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। শনিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে রোববার (১০ জুলাই) সকাল ৮টার মধ্যে মারা যান তারা।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন।
এদিকে নতুন ৮৯২ নমুনা পরীক্ষা করে ২৪৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার প্রায় ২৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
হাসপাতালে ৪২২ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। শয্যা-সংকটের কারণে অতিরিক্ত রোগীরা হাসপাতালের মেঝে, করিডর ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছে। এ জন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রোগীর ভিড়ে হাসপাতালের কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই। গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। অক্সিজেনসহ পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও জনবল ও জায়গার অভাব রয়েছে। এ জন্য চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, করোনা এভাবে বাড়তে থাকলে কোনো সিস্টেম কাজে আসবে না। তখন অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাবে। সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যা ঘটেছে। এ জন্য আমাদের সবার সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। নিজের পরিবার ও প্রতিবেশীর জন্য সচেতন হতে হবে। অন্যথায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, অধিকাংশ রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার দরকার হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কাড়াকাড়ি লেগে যাচ্ছে। অনেকেই ৪০ থেকে ৭০ ভাগ অক্সিজেন স্যাচুরেশন নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের অবস্থা জটিল। তাদের কমপক্ষে এক সপ্তাহের জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি রয়েছে। এ রকম বেশির ভাগ রোগীই আসছেন জটিল অবস্থা নিয়ে। আর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ার পর যেসব রোগী আসছেন, তাদের বাঁচানো কঠিন হচ্ছে। এ জন্য আগে থেকেই চিকিৎসাসেবা নিতে হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন বলেন, ২৫০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটিতে এখন শয্যার চেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবারবার সকাল পর্যন্ত ৪২২ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ২৯২ জন। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৩০ জন।
আরবিসি/১১ জুলাই/ রোজি