স্টাফ রিপোর্টার : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় রাজশাহী মেডিক্যাল করেজ হাসপাতালে একদিনে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের ১০ দিনেই রামেক হাসপাতালে ঝরলো ১৭১ জনের প্রাণ।
সর্বশেষ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ৬ এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে নিয়ে ৮ জনসহ মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।
এর আগে গত ১ জুলাই ২২ জন, ২ জুলাই ১৭ জন, ৩ জুলাই ১৩ জন, ৪ জুলাই ১২ জন, ৫ জুলাই ১৮ জন, ৬ জুলাই ১৯ জন, ৭ জুলাই ২০ জন, ৮ জুলাই ১৮ জন, ৯ জুলাই ১৮ জন মারা গেছে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে।
এই দশ দিনে হাসপাতালে করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন ৪০ জন। এ ছাড়া করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১১৬ জন। বাকি চারজন করোনা নেগেটিভ হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন।
এর আগে গত ২৯ জুন করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ ২৫ জন মারা যান। করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিলো এটি।
এদিকে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৪ জন মারা গেছেন এদের মধ্যে সাতজনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। এ ছাড়া নাটোরের চারজন, পাবনা, জয়পুরহাট এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার একজন করে মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তারা।
রামেক হাসপাতাল পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন মারা গেছেন রামেক হাসপাতালের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ২২ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন করে, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ), ১, ৪, ১৪, ১৫, ১৬ ও ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন নাটোরের তিনজন, রাজশাহীর দুজন এবং পাবনার একজন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া আটজনের মধ্যে রাজশাহীর পাঁচজন, নাটোর, জয়পুরহাট এবং চুয়াডাঙ্গার একজন করে মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৪৫৪ শয্যার করোনা ইউনিটে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন ৫২২ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ১৯ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ২০৭ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ২৪৪ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৭১ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১১ জন।
এর আগে শুক্রবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ২৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৭৫ ও রামেক ল্যাবে ৭২ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আরবিসি/১০ জুলাই/ রোজি