• বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ
রাজশাহীতে পুকুরে ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে মষুলধারে বৃষ্টি: হাঁটুপানি শহরের অনেক রাস্তা ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে সরকারকে সহায়তা করবো: সেনাপ্রধান রাজশাহীতে এআইআইবিকে বাস্তব জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের জন্য বিনিয়োগের দাবিতে সমাবেশ রাজশাহীতে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উপর গুলি বর্ষণকারী রবি গ্রেপ্তার রাজশাহীতে অ্যান্টিবায়োটিকের ড্রাগ ও প্রসাধনী আইন বিষয়ে ঔষধ ব্যবসায়িদের মতবিনিময় বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে রাজশাহীর তামান্নার ভ্রমন রিমান্ড শেষে মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত কারাগারে রাজশাহীতে চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনতাই

রূপগঞ্জে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা

Reporter Name / ৯০ Time View
Update : শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে।

সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতদের আসামি করে শনিবার (১০ জুলাই) দুপুরে রূপগঞ্জ থানায় ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. নাজিম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।

মামলার আসামিরা হলেন- সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেম, তার ছেলে হাসিব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহিম, তওসিফ ইব্রাহিম, তানজিব ইব্রাহিম, শাহেন শাহ আজাদ, মামুনুর রশিদ ও মো. সালাহউদ্দিন।

এরইমধ্যে মামলায় উল্লেখিত আট আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকেলে তাদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার গ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবির হোসেন।

এদিকে ৫২ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করলেও একটিবারের জন্যও আসেননি সজীব গ্রুপের মালিক এমএ হাসেম। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দুদিন পার হলেও তার দেখা বা বক্তব্য পাননি গণমাধ্যমকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার পর রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস-এর ‘সেজান জুস’ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ১১০ জন সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।

শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপরই শুরু হয় মরদেহ উদ্ধারের কাজ। আগুনের ঘটনায় ৫২ জন নিহত হয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অধিকাংশ মরদেহই কারখানার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।

কারখানার শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, কারখানাটি তিন শিফটে পরিচালিত হতো। সেখানে কাজ করেন দুই হাজারের বেশি শ্রমিক। কারখানাটিতে সেজান জুসের কর্ক ও লেভেল প্যাকেটিংয়ের কাজ করা হতো। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে নিচ তলায়।

ভবনটির ছাদ থেকে ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। তবে জীবন বাঁচাতে গিয়ে অনেক শ্রমিক ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হন। নিহতও হন কয়েকজন, যাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।

এদিকে আগুন লাগা ভবনটি নিয়ে বিস্তর অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ছিল, ওই ভবনের চারতলায় তালাবদ্ধ থাকা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকায় এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া ভবনটি কোনো বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি করা হয়নি- এমন অভিযোগও উঠেছে স্থানীয় পর্যায়ে। কিন্তু অভিযোগগুলো সত্য নয় বলে জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

অপরদিকে, শনিবার সকাল ৭টা থেকে ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠতলায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই দুই তলায় কোনো লাশের সন্ধান মেলেনি বলে জানা গেছে।

কারখানার ব্যাপারে ওঠা বেশ কিছু অসঙ্গতির অভিযোগ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন শুক্রবারই বলেছেন, ভবনে চারতলায় সিঁড়ির গেট তালাবদ্ধ থাকায় সেখানে আটকা প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে।

আগুন নেভানোর পর তারা চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় ওই তলার একটি জায়গাতেই ৪৯ জনের মরদেহ পেয়েছিলেন। তাছাড়া কারখানার ভবনে আগুন নেভানোর বা অগ্নিনির্বাপণের তেমন ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টিও স্বীকার করেছিলেন এই ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা।

তবে এ সব অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করেছেন কাজী রফিকুল ইসলাম নামের সজীব গ্রুপের একজন ম্যানেজার। তিনি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেছেন, ‘ইকুইপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) এনাফ (যথেষ্ট) পরিমাণ ছিল। অ্যালার্ম দেওয়ার জন্য সবকিছু ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিচতলায় আগুন ধরার কারণে পুরোটা ছড়িয়ে গেছে।’ চারতলায় তালাবদ্ধ থাকার বিষয়টিও সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘এটি মিথ্যা কথা, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যখন নিচতলায় আগুনটা ধরেছে, তখন সবাই আতঙ্কে ওপরে চলে গেছে।’

ইতোমধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের খুঁজে বের করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং শ্রম অধিদফতরের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আরবিসি/১০ জুলাই/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category