স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার স্ত্রী ও দুই ভাতিজাকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় ওই বাড়ি থেকে চারটি বিদেশি পিস্তল, নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ইয়াবা ও বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (চারঘাট সার্কেল) রুবেল আহমেদ। বাঘার আড়ানী পৌর এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন মজনু নামে এক ব্যাক্তিকে মারপিটের অভিযোড়ে মেয়র মুক্তার আলীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জেরা পুলিশের সহকারি এসপি আবু সালেহ মোহাম্মদ আশরাফুল আলম, চারঘাট সার্কেলের এএসপি রুবেল হোসেন ও বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় পুলিশ মেয়রের বাড়ি থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৩ রাউন্ড গুলি, ও মাদক উদ্ধার করেন। এসময় বাড়িতে মুক্তারকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও দুই ভাতিজাকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনা ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন মেয়রের স্ত্রী ও স্বজনরা।
বাঘা থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আড়ানী পৌর এলাকার বাসিন্দা ও পল্লী চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন মজনুকে তার বাড়িতে গিয়ে মারপিট করে মেয়র মুক্তার আলী ও তার সহযোগীরা। এ অভিযোগে থানায় মামলা দাযেরের পর রাতেই পুলিশ মুক্তার আলীর বাড়িতে আভিযান পরিচালনা করেন।
পুলিশ জানায়, মেয়র মুক্তার আলীর ঘরের আলমারির ড্রয়ার থেকে ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার নগদ টাকা, অন্য ঘর থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি সাটার গান, দুটি বন্দুক, ৪৩ রাউন্ড তাজা গুলি এবং সাত পুরিয়া হেরোইন, ১০ গ্রাম গাঁজা ও ২০ পিস ইয়াবা জব্দ করে। এ ঘটনায় বাড়িতে থাকা মুক্তার আলীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০) ও দুই ভাতিজা সোহাগ (২৩) এবং শান্ত ইসলামকে (২২) আটক করা হয়।
বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, অন্যায় ভাবে মারপিট, মাদক, এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে মেয়র মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে মারপিট মাদক এবং অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার স্ত্রীর নামে দুটি মামলা এবং তার দুই ভাতিজার বিরুদ্ধে মারপিটের মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার সকালে তাদেরকে আদালতে চালান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মেয়র মুক্তার আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। তবে পৌর কাউন্সিলর কার্তিক হালদার ও মানিক মিয়া বলেন, বাড়ীতে টাকা পাওয়ার ঘটনা সঠিক। এটি ব্যবসা সংক্রান্ত টাকা। ঘটনার দিন বিকেলে নগর এ অর্থ পাওয়া যায়। এছাড়া অস্ত্র, গুলি এবং মাদক পাওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
প্রসঙ্গত, মুক্তার আলী গত ১৫ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহী’ হয়ে অংশ নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।
আরবিসি/০৭ জুলাই/ রোজি