স্টাফ রিপোর্টার : সকল জল্পনা শেষে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা ১৫০ বেডের রাজশাহী সদর হাসপাতাল পুনরায় চালু হচ্ছে। এরই মধ্যে হাসপাতালটির অবকাঠামো সংস্কারের কাজ শুরু করেছে গণপুর্ত বিভাগ। স্থানীয়দের দীর্ঘ দিনের দাবি ও বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজশাহীতে আরও একটি হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় সদর হাসপাল চালুর অনুমতি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম ইয়াজদানী। তিনি বলেন, রাজশাহীবাসীকে সুন্দর চিকিৎসার আওতায় আনতে চাচ্ছি আমরা।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, দীর্ঘ দিন পড়ে থাকা রাজশাহী ১৫০ বেডের সদর হাসপাতালটি চালু করতে প্রশাসনিক অনুমতি পাওয়া গেছে। আর্থিক বরাদ্দ দেয়নি। তবে তারা বলেছে কাজ শুরু করেন। আমরা আড়াই কোটি টাকার বাজেট দিয়েছিলাম। এর মধ্যে সিন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম সহ কন্সট্রাকশনের (অবকাঠামো) বিভিন্ন বিষয় আছে। ওখানে আমরা করোনা ডেডিকেটেড ইউনিট করতে চাই। যেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিন্টেম সুবিধা থাকবে। গুরুতর রোগীদের জন্য ১৫টি আসিইউ বেডের সুবিধা থাকবে। গতকাল সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য বিভাগের ডেপুটি ডাউরেক্টরসহ সদর হাসপাতালটি আবারো পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে পিডিবির প্রতিনিধিও ছিল। তাদেরকে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে কোন জাগায় কোন কাজ করতে হবে, তারা রিপিয়ার কন্সট্রাকশনের (অবকাঠামো সংস্কার) কাজটা শুরু করে দিয়েছে। আর অক্সিজেনের জন্য যাদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন, তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। কে কাজ করবে সেই বিষয়ে হয়তো মন্ত্রণালয় থেকে যোগাযোগ করবে। আগামী দুই একদিনের মধ্যে তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হবে। তারাও কাজ শুরু করবে। এক সাথে দুইটা কাজ (অবকাঠামো ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম) শুরু করলে দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে আমরা হয়তো পড়ে থাকা হাসপাতালটি পুনরায় ব্যবহার করতে পারবো।
পরিচালক বলেন, এটা একটা দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে যদি ওখানে রোগী রাখার মতো অবস্থা তৈরি হয়, তবে আপাতত রামেক হাসপাতালের সাধারণ রোগীদের সদর হাসপাতালে সিফক করিয়ে রামেক হাসপাতালে আরও করোনা ওয়ার্ড বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করা যাবে। এখন করোনা বা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের প্রত্যেকেরই অনেক বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন পড়ছে। তাই সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু না করা পর্যন্ত হাসপাতালটিকে কারোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল করা সম্ভব হবে না।
৫৬টি ওয়ার্ডের কথা বলা হলেও রামেক হাসপাতালে প্রকৃত ওয়ার্ডের সংখ্যা ৪২টি। অন্যগুলো কেবিন বা বিশেষ ওয়ার্ড। বর্তমানে সেই ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডের ৪০৫টি বেডে করোনা বা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নতুন করে ৪ নম্বর ওয়ার্ডটিও করোনা রোগীদের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ চালু করা হবে। যেখানে ৫০টি বেড থাকবে। এটা চালু করা গেলে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ৪৫৫টি বেড হবে।
হাসপাতালে এই ৪৫৫টি বেডের প্রত্যেকটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা রয়েছে। এর বাইরে ১ হাজার ১১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২৩৩টি কনসেনট্রেটর এবং ১২ বাই পেড এবং ৬৯টি হাই ফ্লো নোজাল ক্যানোলার সুবিধা রয়েছে। রোগীদের এনবিপি মাস্ক সরবরাহ করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ৩০টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ২০টি বেড গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া আছে।
আরবিসি/০৪ জুলাই/ রোজি