আরবিসি ডেস্ক: ২০১৮ সালের পরে পণ্যটির দাম বেড়ে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। অবশ্য ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই বিশ্ববাজারে তেলের দাম মোটামুটি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, যা স্বল্প মেয়াদে আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে আগাম কেনাবেচায় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ সেন্ট কমে ৭৫ দশমিক ১৩ ডলারে নেমেছে। অবশ্য এর আগের দিন বৃহস্পতিবার প্রতি ব্যারেলে জ্বালানি তেলের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৫ দশমিক ২৩ ডলারে উঠেছে। ব্যারেলপ্রতি ৬২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ দশমিক ৯১ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এই দরে কেনাবেচা হওয়া তেল আগামী মাসে ক্রেতাকে সরবরাহ করা হবে।
অন্যদিকে ইউরোপের বাজারে শুক্রবার প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম সাত সেন্ট কমে ৭৫ দশমিক ৭৭ ডলারে নামে। বৃহস্পতিবার ব্যারেলপ্রতি দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৭৫ দশমিক ৮৩ ডলারে ওঠে। সার্বিকভাবে বিশ্ববাজারে গত ২০১৮ সালের অক্টোবরের গত পৌনে তিন বছরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।
সৌদি আরব ও রাশিয়া আগামী মাস (আগস্ট) থেকে দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ চার লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিল। এতে বাগড়া দেয় ইউএই। এই দেশটিরও চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দৈনিক জ্বালানি তেল সরবরাহের পরিমাণ ২০ লাখ ব্যারেল বাড়ানোর কথা থাকলেও সেখান থেকে তারা আপাতত সরে এসেছে।
সৌদি আরব ও রাশিয়া ওপেকের সদস্যদের জন্য তেল সরবরাহের একটি পরিকল্পনা তৈরি করলেও তা সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কারণে বাস্তবায়ন করতে পারছে না। সৌদি আরব ও রাশিয়া আগামী মাস (আগস্ট) থেকে দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ চার লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিল। এতে বাগড়া দেয় ইউএই। এই দেশটিরও চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দৈনিক জ্বালানি তেল সরবরাহের পরিমাণ ২০ লাখ ব্যারেল বাড়ানোর কথা থাকলেও সেখান থেকে তারা আপাতত সরে এসেছে।
এদিকে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা আগামী বছরের শেষ দিকে আবার করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি বা আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) সম্প্রতি পূর্বাভাস দিয়েছে। গোল্ডম্যান স্যাকস এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯–এর কারণে সরবরাহের ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছিল তা দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশে দেশে দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া গতি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসও সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর কারণে সরবরাহের ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছিল তা দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশে দেশে দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া গতি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ছে।
গোল্ডম্যান স্যাকসের গ্লোবাল হেড অব কমোডিটিজ রিসার্চ জেফরি কুরি বলেন, ‘আশা করি, স্বল্প মেয়াদে আমরা প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল ৮০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হতে দেখব। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকেই তা ঘটতে পারে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদা বেড়ে ইতিমধ্যে ৯ কোটি ৭০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে। তা আগামী আগস্টে ৯ কোটি ৯০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হতে পারে।’ নতুন পূর্বাভাসে বলেছে, বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা আগামী ২০২২ সালের শেষ দিকে বেড়ে আবার কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার আগের অবস্থায় ফেরার সম্ভাবনা আছে।
প্যারিসভিত্তিক আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাও (আইইএ) তাদের নতুন পূর্বাভাসে বলেছে, বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা আগামী ২০২২ সালের শেষ দিকে বেড়ে আবার কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার আগের অবস্থায় ফেরার সম্ভাবনা আছে। সংস্থাটির মতে, চলতি ২০২১ সালে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা মোটামুটি বাড়বে। তবে আগামী বছরে জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদা বেড়ে ১০ কোটি ৬ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হবে। সূত্র: রয়টার্স ও মার্কেট ওয়াচ।
আরবিসি/০৩ জুলাই/ রোজি