• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ অপরাহ্ন
শীর্ষ সংবাদ

থেমে নেই শিল্পীর তুলি

Reporter Name / ১৫৫ Time View
Update : শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১

রাবি প্রতিনিধি : মধ্যদুপুর। বর্ষায় সূর্যের মৃদু আলোর ফলে বাসার বাইরের বারান্দায় বৈদু্যুতিক বাতিটা জ্বলছে। ক্যানভাসে ছোঁয়া লাগছে হরেক রকমের রংতুলির। লাল, নীল, সবুজ, হলুদসহ নানা রঙের মিলনে তৈরি হচ্ছে নানান চিত্রকর্ম, রঙিন হচ্ছে ক্যানভাস। কোনও কোনও চিত্রকর্মের ক্যানভাসে ফুটে উঠছে আবহমান গ্রাম বাংলার প্রকৃতি। বিমূর্ত ধারায় নির্মিত কোনও চিত্রকর্ম করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতার ইঙ্গিত বহন করছে আবার কোনও চিত্রকর্মে ফুটে উঠছে দেশের বিভিন্ন সময়ের ইতিহাস। যা আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে অতিতের গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলির কথা।

বলছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক ও চিত্রশিল্পী ড. হীরা সোবাহানের কথা। করোনায় থেমে নেই এই শিল্পীর তুলি। করোনাকালে নিজ বাসাতে অবস্থান করে তিনি এঁকেছেন ৫২৭ টি চিত্রকর্ম।
কৌতুহলবশত একদিন দুপুরে যাওয়া হয় শিল্পী ড. হীরা সোবাহানের বাসায়। গিয়ে দেখা যায় নিজ বাসার বারান্দায় রঙ-তুলি নিয়ে ক্যানভাস রাঙ্গাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। কথা হয় এই চারুশিল্পীর সঙ্গে। তিনি বলেন, করোনাকালের শুরু থেকেই প্রায় প্রতিনিয়ত ছবি এঁকে চলেছি। শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস নেওয়া, ছবি আঁকা, বই লেখা এবং ছাপচিত্র নিয়ে গবেষণা করতেই প্রতিটি দিন অতিবাহিত হয়।

কি কি মাধ্যমে চিত্রকর্মগুলো এঁকেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ৫২৭ টি চিত্রকর্ম এঁকেছি। এর মধ্যে মনোপ্রিন্ট প্রক্রিয়ায় গ্লাস, বোর্ড পেপার এবং পিএস প্লেটের সাহায্যে ১৮৯ টি, মিক্সডমিডিয়ায় পেপার কাটিং, অ্যাক্রেলিক এবং প্যাস্টেল রঙ দিয়ে ১১৫ টি, ডিজিটাল মাধ্যমে ১০৭ টি, পেইন্টিং মাধ্যমে ৯ টি, অ্যাক্রেলিক এন্ড মিক্সড প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ বিষয়বস্তু নিয়ে ৫৮ টি, ফুল নিয়ে ৩৭ টি এবং ফল নিয়ে ৬ টি চিত্রকর্ম এঁকেছি। এছাড়াও প্লেট লিথোগ্রাফি প্রক্রিয়ায় ৬ টি চিত্রকর্ম এঁকেছি।

চিত্রকর্মগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিল্প মানুষের মনের খোরাক মিটায়। একটা চিত্রকর্ম একজন শিল্পী তার মনের মাধুরি মিশিয়ে আঁকেন। আর প্রতিটি চিত্রকর্মের দ্বারা একটা নির্দিষ্ট বার্তা দিয়ে থাকেন। আমার চিত্রকর্মের দ্বারা দর্শনার্থীরা করোনাভাইরাসের নিষ্ঠুরতা অনুভব করতে পারবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ বিষয়বস্তুর উপর কিছু চিত্রকর্ম আছে যেগুলো দর্শনার্থীদের চোখে মাতৃভূমির সৌন্দর্যগুলো ফুটিয়ে তুলবে।’

শিল্পী ড. হীরা সোবহান বলেন, ‘একজন চারুশিল্পী হিসেবে আমার কাজই হলো ছবি আঁকা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে হাতে খুব একট সময় থাকে না। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়টি কাজে লাগাতে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ছবি এঁকেছি। মূলত আমি একজন ছাপচিত্র শিল্পী। ছাপচিত্র নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি এবারে দর্শনার্থীদের সামনে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে চিত্রকর্মগুলো তুলে ধরতে চেয়েছি। ফরে নতুন নতুন কিছু প্রক্রিয়ায় ছবি এঁকেছি। যা দর্শনার্থীদের বিমোহিত করবে।’

পরবর্তীতে চিত্রকর্মগুলো দিয়ে তিনি শিল্প-প্রদর্শনীর আয়োজন করবেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, করোনাকালে যেহেতু সরাসরি সম্ভব না, তাই এসকল চিত্রকর্ম দিয়ে অনলাইন প্রদর্শনীর আয়োজন করব। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলে ঢাকার বিভিন্ন গ্যালারিতে শিল্প-প্রদর্শনীর আয়োজন করব। যা সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

আরবিসি/০২ জুলাই/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category