স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১১ জুন থেকে চলছিলো সর্বাত্মক লকডাউন। বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশের কঠোর লকডাউনেও যুক্ত রাজশাহী। গত তিন দফায় ঢিলেঢালা লকডাউন হলেও বৃহস্পতিবার পাল্টে যায় রাজশাহীর দৃশ্য। এদিন সকাল থেকেই রাজশাহীতে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। এ কারনে মানুষ এমনিতেই ঘর থেকে বের হয় নি। তাই মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীকেও বেগ পেতে হয় নি। সকাল থেকে বৃষ্টিপাতের কারণে এমনিতেই মানুষ অলস সময় পার করেছন ঘরে ঘরে। ফলে কোলাহলের শহরে নেমে এসেছে সুনশান নীরবতা।
রাজশাহী নগর ছাড়াও জেলার সর্বত্র লকডাউন কার্যকর হয়েছে প্রথমদিন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহানগর পুলিশ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের পাশাপাশি র্যার ও বিজিবি সদস্যরাও বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছেন। ফলে সেভাবে কেউই ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না কেউ। কাঁচাবাজার, খাদ্য পণ্য ও ওষুধ কেনার মতো জরুরি প্রয়োজনেও বের হয় নি মানুষ। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন কাচা বাজারেও ক্রেতাশূন্য দেখা যায় সকাল থেকেই।
সকাল থেকেই বিভাগীয় শহর রাজশাহীর পথঘাট প্রায় জনশূন্য। শহরের তিনটি প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। রাস্তায় দুই-একটি রিকশা, মোটরসাইকেল এবং জরুরি সেবার গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে শহরের সব মার্কেট, বিপণিবিতান এবং সব ধরনের দোকানপাট। লকডাউনের কঠোরতায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা একেবারেই মন্থর হয়ে পড়েছে। শহরের জনবহুল পথঘাট খাঁ খাঁ করছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজশাহী মহানগরের শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর, শিরোইল বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, নিউমার্কেট, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, সোনাদীঘির মোড়, লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি জনবহুল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট একেবারেই মানুষ নেই। তবে নিত্যপণ্যের দোকান, ওষুধের ফার্মেসি খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই। নগরীর উপশহর মোড়ের ওষুধের দোকান সকাল থেকে খোলা থাকলেও ক্রেতাশূণ্য রয়েছে।
শহরের তিন দিকের প্রবেশমুখ আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা ও কাটাখালী এলাকায় পুলিশ সদস্যরা ব্যারিকেড দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব পয়েন্ট মানুষ ও যানবাহনের প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর বলয় গড়ে তুলেছে। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ অহেতুক বাইরে ঘোরাঘুরি করলে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের শাস্তির মুখেও পড়তে হবে। তাই কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তিনি সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি জেলার সবকটি উপজেলায়ও লকডাউন চলছে। স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা লকডাউন পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি দেখভাল করছেন খোদ রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল।
আরবিসি/০১ জুলাই/ রোজি