আরবিসি ডেস্ক : চিত্রনায়িকা পরীমনির দায়ের করা ‘ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা’ মামলার প্রধান দুই আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং তুহিন সিদ্দিকী অমিকে জামিন দিয়েছে আদালত।
ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারকি হাকিম মোছা. শাহাজাহী তাহমিদা মঙ্গলবার পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামিদের প্রধান আাইনজীবী এ এইচ ইমরুল কাওছার জানান, এ মামলায় আগামী ৮ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য আছে। ওই দিন পর্যন্তই দুই আসামিকে জামিন দিয়েছেন বিচারক।
এ মামলায় জামিন পেলেও মুক্তি মিলছে না নাসির ও অমির। বিমানবন্দর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণখান থানায় মানবপাচার এবং পাসপোর্ট আইনের মামলারও আসামি অমি। কারামুক্ত হতে হলে সেসব মামলাতেও তাদের জামিন পেতে হবে।
‘ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার পরিদশর্ক মো. কামাল হোসেন ৫ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে ইমরুল কাউসারসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে গত ১৪ জুন নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ছয়জনক আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি।
উত্তরা ক্লাবের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ (৫০) ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি)। তুহিন সিদ্দিকী অমিও ওই ক্লাবের সদস্য ছিলেন।
পরীমনির অভিযোগ পূর্ব পরিচিত অমি গত ৮ জুন রাতে তাকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ বোট ক্লাবে নিয়ে যান এবং সেখানে নাসির তাকে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ করেন।
সাভার থানায় পরীমনি মামলা করার পরপরই উত্তরার একটি বাসা থেকে নাসির ও অমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে সময় ওই বাসা থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।
পরে ১৫ জুন মধ্যরাতে বিমানবন্দর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের এসআই মানিক কুমার শিকদার।
মাদকের মামলায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং তুহিন সিদ্দিকী অমিকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই মামলার রিমান্ড শেষে সাভার থানায় পরীমনির করা মামলায় গত ২৩ জুন তাদের ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
১৫ জুন রাতে দক্ষিণখান থানা এলাকায় অমির একটি অফিস থেকে ১০২টি পাসপোর্ট ও ১৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এতগুলো পাসপোর্ট রাখায় অমির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনেও দক্ষিণখান থানায় মামলা হয়।
গত ১৮ জুন আব্দুল কাদের নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মানবপাচারের মামলায় আশকোনায় অমির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তিনটি গাড়ি এবং ১৯টি হার্ড ডিস্ক জব্দ করে সিআইডি।
বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে গত ১৭ জুন দক্ষিণখান থানায় শাহীন আলম নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় অমির নয় সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে ৩৯৫টি পাসপোর্ট, ২২টি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, সম্পত্তির দলিল, ক্রেডিট কার্ড, অলিখিত স্টাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভিসা কার্ড, পেনড্রাইভ, মোবাইল সেট উদ্ধারের কথা জানায় সিআইডি।
আরবিসি/২৯ জুন/ রোজি