আরবিসি ডেস্ক : ২০১২ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হওয়া নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের আঁকা একটি চিত্রকর্ম সম্প্রতি কুমিল্লার এক প্রদর্শনীতে প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চিত্রকর্ম আত্মসাতের অভিযোগে দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে মামলাটি করা হয়। বিষয়টি শাওন নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে রুমা চৌধুরী ও মঞ্জুরুল আজিম পলাশ নামের দুই ব্যক্তিকে। তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২৯ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছেন।
মামলার এজহার থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে যাওয়ার পর পুত্র নিষাদকে নিয়ে বেশ কিছু ছবি এঁকেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। ওই সময়ে হুমায়ূন আহমেদ তার আঁকা ২৪টি ছবি প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য রুমা চৌধুরী ও তার সাবেক স্বামী বই ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহাকে দেন।
এরপরে রুমা চৌধুরী ও বিশ্বজিৎ সাহা হুমায়ূন আহমেদকে বারবার ছবিগুলো বিক্রির প্রস্তাব দিলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। লেখক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ছবিগুলো তিনি এঁকেছেন তার নিজের এবং পুত্র নিষাদের আনন্দের জন্য। বিক্রি করে অর্থ লাভের জন্য নয়। সে সময়ে রুমা চৌধুরী গুজব রটান প্রদর্শনীর ২৪টি ছবির মধ্যে ৪টি ছবি হারানো গেছে।
পরবর্তীতে বারবার চাওয়া সত্ত্বেও ছবি ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করেন ওই সাবেক দম্পতি। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তির সহায়তায় তারা ২০টি ছবি ফেরত দেন হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজের জিম্মায়।
পরবর্তীতে রুমা চৌধুরীর সঙ্গে বিশ্বজিৎ সাহার বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং তিনি কুমিল্লার মঞ্জুরুল আজিম পলাশকে বিয়ে করেন।
গত ৩১ মার্চ ফেসবুকে কুমিল্লায় লিংকবাংলা শিল্প প্রদর্শনীর বিজ্ঞাপন দেন বিশ্বজিৎ সাহা। যেখানে ১ থেকে ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে একটি ছবি হুমায়ূন আহমেদের আঁকা ছবি ছিল। এর দ্বারা রুমা চৌধুরীর যোগসাজশে মঞ্জুরুল আজিম পলাশ ছবিগুলো অসাধুভাবে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ শাওনের। যা দণ্ডবিধির ৪০৬/৪১১/৪২০/৩৪ দ্বারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরবিসি/২৯ জুন/ রোজি