আরবিসি ডেস্ক : স্ত্রীকে দেওয়া তালাকের নোটিশে অবজ্ঞাপূর্ণ, যুক্তিহীন, অমানবিক শব্দ উল্লেখ করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আইনসচিব ও নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকার বাসিন্দা বর্তমানে কানাডার উইন্ডসর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত রাখী কে জামানের করা এক রিট আবেদনে এই আদেশ দেন আদালত। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুল্লাহ আল নোমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
রিট আবেদনে বলা হয়, রাকিব মুক্তাদির জোয়ারদারের সঙ্গে ২০১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রাখী কে জামানের। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা না হওয়ায় ২০১৭ সালের অক্টোবরে রাখীকে তালাকের নোটিশ পাঠান রাকিব। এই নোটিশের একাংশে বলা হয়, ‘স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য, যাহা শরিয়তের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাহার উক্ত চালচলন পরিবর্তন করার জন্য আমি নিজেই বহুবার চেষ্টা করিয়াছি। কিন্তু অদ্যাবধি তাহার কোনো পরিবর্তন সাধিত হয় নাই।’ এই শব্দগুলোকে আপত্তিকর, অবজ্ঞাপূর্ণ, যুক্তিহীন, অমানবিক উল্লেখ করে রিট আবেদনে বলা হয়, মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ এবং মুসলিম বিয়ে ও তালাক (নিবন্ধন) আইন, ১৯৭৪ অনুযায়ী এ ধরনের শব্দের ব্যবহার স্পষ্টভাবে নারীর মানবাধিকার ও তার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে। একই সঙ্গে সংবিধানের ২৭, ২৮ এবং ৩২ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, এ ধরনের শব্দের ব্যবহার একজন নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর। এ বিষয়গুলোর (শব্দগুলো) কারণে তালাকপ্রাপ্ত একজন নারীকে পরে বিয়ে করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিলতার মুখে পড়তে হয়। এ কারণেই এই শব্দগুলো বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।
আরবিসি/২৮ জুন/ রোজি