• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসক সংকট

Reporter Name / ৯৬ Time View
Update : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধনিক সদর হাসপাতালের ডেডিকেটেড করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসক, ওষুধ, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।

অভিযোগে রয়েছে, করোনা ২য় ঢেউয়ের শুরুতে ১৮ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ওয়ার্ডে ১২ জন চিকিৎসক থাকলেও করোনা সংক্রমণ বাড়তে বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীদের চাপের কারণে ৭২ শয্যায় উন্নতি করা হয় করোনা ওয়ার্ড। কিন্তু শয্যার সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হয় মাত্র ৮ জন।

বর্তমান করোনা ওয়ার্ডে ৭২ জন রোগী ভর্তি থাকলেও ২০ জন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেয়া খুই কষ্টকর হয়ে পড়েছে বলে জানান করোনা ওয়ার্ডের ফোকাল পারর্সন ডাঃ আহনাক শাহরিয়ার। তিনি আরো জানান, ১০ জনের চিকিৎসকের দল ১৫ দিন করে সকাল, দুপুর ও রাত ৩ বেলা ডিউটি করে। এর মধ্যে যারা রাতের ডিউটি করে, তাদের পরের দিন ডিউটি দিলে খুব অসুবিধা হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো দরকার।

ডাঃ আহনাক শাহরিয়ার আরও জানান, রক্ত জমাট না বাধে সেই ইনোক্সাপারিন ইনজেকশন বর্তমানে হাসপাতালে সরবরাহ নেই। ৪২ জন নার্স রয়েছে, তবে নার্সের সমস্যা না থাকলেও আয়া, ওয়ার্ডবয় ও সুইপারের অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রোগীর স্বজন জানান, সবরকম ওষুধ দেয়া হচ্ছে না। ফলে অনেক গরীব রোগীর স্বজনদেরকে বাহির থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। আর মাত্র ৪ জন আয়া, ৪ জন ওয়ার্ডবয় ও ৪ জন পরিচ্ছনতা কর্মী দিয়ে সেবা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে হাসপাাতাল কর্তৃপক্ষের। বিশেষ করে ওয়ার্ডে রোগীদের খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ সময়মত পরিস্কার না করার নোংরা এবং পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। বর্তমানে অক্সিজেনের প্যান্ট থেকে কেন্দ্রিয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ চালু হওয়ায় আর অক্সিজেনের সমস্যা না থাকলেও এই গরমে ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং এ রোগীদের পড়তে হচ্ছে বাড়তি কষ্টের মধ্যে।

একাধিক রোগীর স্বজনরা জানান, ডিউটিরত চিকিৎসকরা রোগীর কাছে কম যাচ্ছে, তারা নার্সকে দিয়ে কাজ সেরে নিচ্ছে। আর দুপুরের খাবার সময়মত দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া ৩টি এ্যাম্ববুলেন্স থাকলেও ২ টি চালু রয়েছে। বেশ কয়েকদিন থেকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়াটা করোনা রোগীদের এখন ভ্যাগোর ব্যাপার। ২টি লিফট থাকলেও লিফটম্যান না থাকায় ৮ তলায় করোনা ওয়ার্ড রোগীসহ স্বজনদের কস্টের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আর ১টি লিফট এর কারিগরি সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে গণপূর্ত বিভাগ ঠিক করে দিচ্ছে না।

করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী’র পিসিআর ল্যাব পাঠানো হয়, তবে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হওয়ায় জেলায় করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে, তাই হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবী নাগরিক কমিটির।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মমিনুল হক জানান, সদর হাসপাতালে কোভিড বেড সংখ্যা ৭২টি, বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে ৭২ জন। গত মার্চ থেকে এপর্যন্ত ভর্তিকৃত রোগী ৪৮৯ জন, অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৯১ টি, মারা গেছে ৯৬ জন এবং সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪১৭ জন।

এদিকে সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, সদর হাসপাতালে করোনা’র নমুনা পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ, চিকিৎসক, ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে বলা হয়েছে, দ্রুত সময়ে সমাধানের আশ^াস দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৩৯০৭ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। আর ২৪৮৬ জন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। মারা গেছে ১০২ জন।

আরবিসি/২৭ জুন/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category