আরবিসি ডেস্ক: সোমবার কঠোর লকডাউন কার্যকর হতে যাচ্ছে। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন এ সময়ে মুভমেন্ট পাস চালু থাকবে কিনা। ব্যাংক বীমা শেয়ারবাজার কি খোলা থাকবে? সমকাল অফিসে ফোন করে অনেকেই এরকম তথ্য জানতে চাচ্ছেন। অনেকে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে কিনা তাও জানবার চেষ্টা করছেন। গণমাধ্যমও সরকারের প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় আছে। কারণ প্রজ্ঞাপনে বিস্তারিত জানা যাবে বলে সরকারের তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে। তবে শনিবার সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি।
এর আগে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সোমবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ‘কঠোর লকডাউন’ জারি করে সরকার। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। এ ছাড়া জরুরি পণ্য পরিবহন ছাড়া সব যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজের জন্য যানবাহন চলাচল করতে পারবে। গণমাধ্যম লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক তথ্য বিবরণীতে শুক্রবার রাতে এসব কথা জানানো হয়। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আদেশ শনিবার মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করার কথা থাকলেও শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কোনো কিছু জানানো হয়নি। তাই স্বাভাবিকভাবে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে- এবার লকডাউন কতটা কঠোর হতে পারে এবং কী কী বিধিনিষেধ থাকতে পারে?
এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে- দেশে জারি করা আগের সব লকডাউন থেকে কঠোর হতে পারে এবারের লকডাউন। কারণ, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘কঠোর লকডাউন’ বলতে যে চিন্তাটি করা হয়েছে সেটা হলো, শুধু জরুরি সেবা ছাড়া আর কোনো কিছুই চলবে না। এখন যেমন কিছু কিছু বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে, সেটি হয়তো তখন আর থাকবে না। বর্তমানে যে লকডাউন চলছে, সেখানে সব ধরনের গণপরিবহন চলছে। বাজার, শপিংমল খোলা রয়েছে। অফিস-আদালত, ব্যাংক, বিমা- সব কিছুই খোলা। বেসরকারি খাতেরও সব কিছুই খোলা। তবে ওষুধের দোকান, নিত্যপণ্যের দোকান জরুরি সেবার মধ্যেই পড়ে। তাই এগুলো লকডাউনেও খোলা রাখা যাবে। এ ছাড়া গতবারের মতো মুভমেন্ট পাস নিয়ে বাইরে বের হওয়া যাবে কি না সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, আপাতত এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এটা বাড়ানো হতে পারে।
তিনি আরও জানান, কঠোর লকডাউন চলাকালে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবে। থাকতে পারে সেনাবাহিনীও।
অপরদিকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় শনিবার সকাল থেকে নিত্যপণ্যের বাজারে ভিড় বেড়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কারওয়ান বাজার, রামপুরা, রায়ের বাজার, ধানমন্ডি, গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার ও সুপারশপে ক্রেতাদের ভিড় তুলনামূলক বেশি চোখে পড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, ৭ থেকে ১৪ দিনের মতো বাজার করছেন বেশির ভাগ ক্রেতা। তবে পণ্যের দাম আগের মতোই আছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এ ছাড়া লকডাউনের ঘোষণায় এরই মধ্যে রাজধানীর ঢাকা ও আশপাশের জেলা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটতে শুরু করেছেন অনেকেই। এ কারণে শনিবার সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটসহ দেশের অন্যান্য রুটেও যাত্রী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী গাড়ির চাপ বেড়েছে।
আরবিসি/২৬ জুন/ রোজি