আরবিসি ডেস্ক : দ্বিতীয় ঢেউয়ে ডেল্টা ভাইরাসের হাত ধরে যে দাপট দেখিয়ে ছিল সেই ভাইরাস এখন ডেল্টা প্লাসে পরিণত হয়েছে। ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়ান্টটিতে ‘কে৪১৭এন’ নামে একটি অতিরিক্ত মিউটেশন থাকায় দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে নতুন স্ট্রেন।
সম্প্রতি একটি পরীক্ষার মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বিশেষজ্ঞদের হাতে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ডেল্টা ভাইরাস মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ সংক্রমণ করার ক্ষমতা। যা বিরাট আকারে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
গবেষণায় তিনটি শহরের স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের নমুনা নিয়ে বিবেচনা করা হয়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে অ্যান্টিবডি গুলো তাদের কাজ করছে এবং সেইসঙ্গে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে কোষগুলিকে বিশেষ করে ফুসফুসে মারাত্মকভাবে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। এই দুটি বিষয় নিয়ে ল্যাবে বিশ্লেষণ চালিয়েছে গবেষকরা।
গবেষকরা জানাচ্ছেন ডেল্টা প্লাস ভেরিয়েন্ট অ্যান্টিবডি কে প্রতিরোধ করতে পারে। এবং এটি দ্রুত অন্যরূপে নিজেকে বদলে নিতে পারে। যে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তারা সকলেই টিকা নিয়েছিলেন তা সত্ত্বেও সংক্রমিত হন। তাই গবেষকদের মতে খুব সাবধান থাকতে হবে প্রতিপদে সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। এছাড়া যথাযথ করোনাবিধি পালন করতে হবে। ডেল্টা প্লাসের গতিবিধি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।
জানুয়ারি মাসে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ ক্ষমতা বেড়েছে ২ শতাংশ। গুপ্ত ল্যাব ট্যুইট করে জানিয়েছেন তারা ডেল্টা ভাইরাসের থেকে দেখতে পেয়েছে এদের মধ্যে রয়েছে ইমিউনিটি ক্ষমতার সঙ্গে লড়াই করা প্রবণতা। পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডিকে পাশ কাটিয়ে নিজের কার্যসিদ্ধি করতে পারে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট।
‘ডেল্টা প্লাস’ ভ্যারিয়ান্ট আগের ভ্যারিয়ান্টগুলোর চেয়ে সহজে ছড়ায়, ফুসফুসের কোষের সাথে অপেক্ষাকৃত সহজে যুক্ত হয়।
করোনাভাইরাসের সাধারণ উপসর্গের পাশাপাশি আরো কিছু বিশেষ উপসর্গের উপস্থিতি থাকে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণের ক্ষেত্রে। বিশেজ্ঞরা বলছেন ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের অন্যতম প্রধান উপসর্গ মাথা ব্যাথা। এর পাশাপাশি গলা ব্যাথা, সর্দি এবং জ্বরও থাকতে পারে। তবে এই ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হলে স্বাদ বা গন্ধের অনুভূতি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। পাশাপাশি কাশি হওয়ার সম্ভাবনাও বেশ কম।
ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন সহ ৯টি দেশে এই ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়ান্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট এরই মধ্যে বিশ্বের ৮০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশেও ডেল্টা প্লাসের সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাস সাধারণত সবসময়ই পরিবর্তিত হতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাস পরিবর্তিত হয়ে দুর্বল হয়ে যায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তিত ভাইরাস পুরনো ভাইরাসের চেয়ে শক্তিশালী ও বেশি সংক্রামক হয়ে দেখা দেয়, যেই পরিবর্তিত রূপটি অন্য ভ্যারিয়ান্টগুলোর তুলনায় বেশি মারাত্মক অসুস্থতা তৈরি করে।
আরবিসি/২৬ জুন/ রোজি