আরবিসি ডেস্ক : করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় করোনাবিষয়ক জাতীয় কমিটির দেওয়া সারাদেশে ১৪ দিন শাটডাউনের সুপারিশের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত আসতে বলে আভাস দিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি এমন যে খুব দ্রুতই আমাদের এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সারা দেশে সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকারের যথেষ্ঠ প্রস্তুতিও আছে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, দেশে ‘করোনা মহামারির শুরুতে আমরা যেমন লকডাউন দিয়েছিলাম তার মতোই কিংবা তার চেয়ে আরও কঠোর হতে পারে এবারের শাটডাউন।’
সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী বেশ কিছু জেলায় বিধিনিষেধ দেয়া হয়। ঢাকার আশপাশের সাত জেলাতেও বিধিনিষেধ চলছে গত মঙ্গলবার থেকে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও মানুষের ঢাকায় আসা-যাওয়া বন্ধ হয়নি।
অন্যদিকে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। বরং করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশে শাটডাউনের সুপারিশ করেছে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বিকালে সারাদেশ ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশের কথা জানায় পরামর্শক কমিটি।
শাটডাউনের প্রকৃতি সম্পর্কে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।’
কমিটির সভাপতি ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘শাটডাউন মানে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছুই বন্ধ রাখার কথা বোঝানো হয়েছে। সব কিছু বন্ধ থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসার বাইরে বের হতে পারবে না। এটা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এখন আমরা সুপারিশ করেছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকার নেবে।’
কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশের পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা খুবই গভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এরই মাঝে আমরা ঢাকার চারপাশের ৭ জেলা এবং সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোকে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় এনেছি। অবস্থা বিবেচনায় ঢাকাসহ সারাদেশে শাটডাউনের প্রস্তুতি সরকারের আছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ এটিকে তৃতীয় ঢেউ বললেও অনেকেই বলছেন দ্বিতীয় ঢেউয়ের আকার বেড়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চলতি বছর দেশে সংক্রমণের ২৪তম সপ্তাহে (গত এক সপ্তাহে) শুধু ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১১৪.৪ শতাংশ করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে রংপুর বিভাগ, সেখানে সংক্রমণ বেড়েছে ৮৬.৭ শতাংশ।
সংস্থাটি আরও বলছে, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর বাইরে আরও ১৫টি জেলা আছে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে। সংক্রমণের মধ্যম ঝুঁকিতে আছে ৮টি জেলা।
আরবিসি/২৪ জুন/ রোজি