• মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

করোনা আক্রান্ত ছেলেকে বাড়িতে ঠাঁই দিলোনা বাবা!

Reporter Name / ৯৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় স্ত্রীসহ ভাড়া বাড়ি ছেড়ে বাবার বাসায় যান সোহরাব আলী (৩৫)। বাবার বাড়ি গিয়েও ঘটে বিপত্তি। বাবা বাড়িতে ঠাঁই না দিয়ে সোহরাব আলী ও তার স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেন। পরে স্ত্রীসহ বাড়ির পাশের একটি আমবাগানে টিনের ছাপরা ঘরে কোনো রকমে থাকার জায়গা হয় তাদের।

সেখানে দুইদিন অতিবাহিত হওয়ার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্গাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে করোনা আক্রান্ত সোহরাব আলী ও তার স্ত্রীকে আমবাগান থেকে বাবার বাড়িতেই একটি কক্ষে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আলীপুর গ্রামে। ওই গ্রামের সোনারপাড়ার খয়বর আলীর পুত্র সোহরাব আলী। সোহরাব আলীর শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়লেও তার স্ত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রামিত হয়নি। তারপরও একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মানিক আলী জানান, সোহরাব আলী পেশায় অটো মেকানিক্স। দুই স্ত্রীর মধ্যে ছোট স্ত্রীকে নিয়ে আলীপুর বাজারের পাশেই একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন সোহরাব আলী। বড় স্ত্রীর সন্তান থাকলেও ছোট স্ত্রী নিঃসন্তান। হঠাৎ সর্দি জ্বর হওয়া গত মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে নমূনা পরীক্ষার পর সোহরাবের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।

ইউপি সদস্য মানিক আলী বলেন, শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার পর সোহরাব আলী ভাড়া বাড়ি ছেড়ে গ্রামের মধ্যে বাবা খয়বর আলীর বাড়িতে ছুটে যান। কিন্তু বাবা খয়বর আলী, মা ও তার বড় স্ত্রী তাদের বাড়িতে জায়গা দেননি। বাধ্য হয়ে ছোট স্ত্রীকে নিয়ে বাবার বাড়ির পাশের একটি আমবাগানে টিনের ছাপরা ঘরের নিচে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় তাদের। দুইদিন অতিবাহিত হওয়ার পর বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সোহরাব আলীকে স্ত্রীসহ উদ্ধার করে বাবা খয়বর আলীর বাড়ির একটি কক্ষে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলে সেখান থেকে কিছু খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয় সোহরাব আলীকে।

দুর্গাপুর থানার ওসি হাশমত আলী জানান, ৯৯৯ হটলাইনে ফোন পেয়ে সেখানে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সোহরাব আলীকে স্ত্রীসহ উদ্ধার করে বাবার বাড়িতে হোম কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করছেন। এমনকি সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই সপ্তাহের শুকনো খাবার দেয়া হয় তাদের।

ওসি আরও বলেন, করোনাকালীন এই মহামারীর সময় এমন অমানবিক ঘটনা যেন কোথাও না ঘটে সে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবং সবাইকে সচেতন করতে মাঠে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী।

আরবিসি/২৪ জুন/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category