• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন

নিরাপত্তাহীনতায় রাবির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা

Reporter Name / ১১৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন, ২০২১

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশবিদ্যালয়ে (রাবি) পদায়নের দাবিতে ‘অবৈধ’ নিয়োগপ্রাপ্তদের একাংশের চলমান আন্দোলনে নিরাপত্তা সংকটে ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় সংবাদিকদের সামনে একথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা।

দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং কোষাধ্যক্ষসহ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন। অনেকের বাসার সামনে গিয়েও হুমকি দিয়ে এসেছেন বলে তারা আমাকে জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা আমার নিজের বাসাতেও বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে খারাপ ভাষায় কথা বলেছেন। এতে আমার নিজ পরিবারও ভীতসন্ত্রস্ত। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকও এ বিষয়ে নিরাপত্তা সংকটকে ভুগছেন বলে তারা আমাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমি বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে মৌখিক এবং লিখিতভাবে জানিয়ে রেখেছি।’
নিয়োগপ্রাপ্তদের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়া নিয়োগপ্রাপ্তদের বিষয়টি সমাধান করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিলেই কেবল আমরা বিষয়টি সমাধান করতে পারব।’

তবে হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে আন্দোলনকারী নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমরা কেনো হুমকি দিতে যাবো! আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। তারা এতো বড় কর্মকর্তা, তাদের হুমকি দিয়ে আমরা ঠেকাতে পারব! বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের নিয়োগ বিষয়ে নেগেটিভ। তারা যে এমন আভিযোগ করবে এটিই স্বাভাবিক।’

পরবর্তী কর্মসূচীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা আর কোনও প্রকার আলোচনা করব না। বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য আমাদের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হওয়ায় এবং সাবেক উপাচার্যের নির্দেশ অমান্য করায় আমরা তার পদত্যাগ দাবি করে আগামী শনিবার সংবাদ সম্মেলন করব। এছাড়া শুক্র, শনিবারের মধ্যে যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ফাইন্যান্স কমিটির সভা কিংবা সিন্ডিকেট সভা করতে চায়, আমরা জীবন দিয়ে হলেও সেটি ঠেকাবো।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স কমিটির (এফসি) সভা ছিলো। পরে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিলে এফসি সভা স্থগিত হয়ে যায়। পরে গত সোমবার দুপুরে স্থানীয় সাংসদ আয়েন উদ্দিন ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে তিন ঘণ্টাব্যপী নিয়োগপ্রাপ্তদের আলোচনাসভা হয়। সভা শেষে নিয়োগপ্রাপ্তরা তাদের আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো একাডেমিক কাজে তারা বাধা প্রদান করবেন না বলে জানিয়েছিলেন।

ফলে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সিন্ডিকেট সভার আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু বিকেল ৬টায় সিন্ডিকেট সভা ঠেকাতে নিয়োগপ্রাপ্তরা উপাচার্য ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেয়। বাধার মুখে রাত সাড়ে আটটার দিকে রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা সাংবাদিকদের সামনে সিন্ডিকেট সভা স্থগিতের ঘোষণা দেয়। পরে নিয়োগপ্রাপ্তরা সেখান থেকে উঠে যান। আবার রাতে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সেখানে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। রাত ১১টা থেকে বুধবার রাত ৯ টা পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করেন। প্রায় ২১ ঘন্টা পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। তবে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে তাদের কোনও আলোচনা হয়নি।

এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে আবদুস সোবহান উপাচার্য হিসেবে শেষ কর্মদিবসে (৬ মে) ১৩৭ জনকে অ্যাডহকে (অস্থায়ী) নিয়োগ দিয়ে পুলিশি পাহারায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। সেদিনই এই নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদান স্থগিত করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরবিসি/২৪ জুন/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category