• সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন

ঢাকার সব ক্লাবে নিষিদ্ধ হচ্ছেন পরীমনি!

Reporter Name / ১০৯ Time View
Update : বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : অভিজাত ঢাকা বোট ক্লাবের ভেতরে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের ঘটনার মধ্যদিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন অভিনেত্রী পরীমনি। ঘটনার চারদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে অভিযোগের বিষয়টি খোলাসা করেন এই ঢালিউড নায়িকা।

এরপর নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানান তিনি। এতে দেশব্যাপী পরীমনির আলোচনায় অভিজাত ক্লাব নিয়ে সমালোচনা ঝড় বয়ে যায়। এই ঘটনায় পরদিন ঢাকার সাভার থানায় পরীমনি তার লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে সেটি নথিভুক্ত করে পুলিশ।

মামলার প্রেক্ষিতে ঢাকা বোট ক্লাবের এন্টারটেইম্যান্ট অ্যান্ড কালচারাল মেম্বার ও প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী মাহমুদ কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যানের নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ আরও তিন নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদিকে, অভিজাত ক্লাব ও অভিনেত্রী পরীমনিকে নিয়ে যখন আলোচনা-সমালোচনা হরধুম চলছে। ঠিক ওই সময় রাজধানীর গুলশানে অল কমিউনিটি ক্লাবের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরীমনির বিরুদ্ধে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় অসদাচরণ ও ভাঙচুরের অভিযোগ তোলা হয়। এরপর বনানী ক্লাবেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে এমন অভিযোগ (যদিও ঘটনাটি মাস ছয়েক আগে)।

গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এই ঘটনাগুলো বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনিকে ঢাকার অভিজাত সব ক্লাবে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ভাবতে শুরু করেছেন ক্লাব কালচার কমিউনিটির মেম্বাররা।

সূত্র জানায়, অভিনেত্রী পরীমনি অভিযোগ করেছে তাকে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার আগের দিন পরীমনি তিনি গুলশানে অল কমিউনিটি ক্লাবে এসে ক্লাব ম্যানেজমেন্টের লোকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। আবার মাস ছয়েক আগে বনানী ক্লাবেও এক তারকা দম্পতির আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি ভাঙচুর চালিয়েছেন। যদিও পরীমনি এই তিনটি ক্লাবের কোনোটির মেম্বার নন।

সূত্রটি জানায়, ক্লাব কালচার কমিউনিটি মেম্বারদের অনেকেই পরীমনিকে নিষিদ্ধ করতে দাবি করছেন। তারা বলেছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। এসব ক্লাবগুলো সমাজের অভিজাত ও সুশীল শ্রেণীর লোদের একটি কমিউনিটি। এক পরীমনির এসব আচরণের জন্য ক্লাব কালচার নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ক্লাবের সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

সূত্রটি বলছে, ঢাকা সব ক্লাব কমিটি ও মেম্বারদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢাকার অভিজাত ক্লাবগুলোতে পরীমনির প্রবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।

এদিকে অভিনয় ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্টদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাবের সদস্য নন পরীমনি। সেখানে আসা-যাওয়াও ছিল না তার। এছাড়া অন্য ক্লাবগুলোর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

বনানী ক্লাবের সেক্রেটারি ওসমান গনী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ঢাকা বোট ক্লাব ও গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবের বিষয়টি সবারই জানা হয়ে গেছে। আর কথা আসছে বনানী ক্লাবের বিষয়। এখানে মাস ছয়েক আগে পরীমনির বিরুদ্ধে এমন একটি ঘটনার অভিযোগ এসেছে। তবে সেটি দৃশ্যমান নয়। ক্লাবের বেয়ারা ও ওয়েটাররা বলেছেন। তবে বিষয়টি বনানী ক্লাব ম্যানেজমেন্টকে জানানো হয়েছে। পরীমনি আমাদের ক্লাবের মেম্বার নন। আমাদের কোনো অনুষ্ঠানে বা পার্টিতে পরীমনিকে দাওয়াত দেওয়া হয় না। যদিও তিনি গেস্ট হিসেবে বাইরের কারও পার্টিতে যোগ দিতে এসে থাকতে পারেন। এছাড়া বাইরের কেউ এই ক্লাবে ঢুকতে পারেন না। ’

তিনি আরও জানান, যদি ক্লাবের কোনো মেম্বার পরীমনিকে গেস্ট হিসেবে নিয়ে আসেন তবে সেটি ওই মেম্বারের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে নিয়ম অনুযায়ী ক্লাবে কোনো মেম্বারের গেস্ট যদি কোনো অঘটন ঘটায় সে ক্ষেত্রে ওই মেম্বারকে শোকজ করা হয়ে থাকে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে

তবে পরীমনির ঘটনার বিষয়ে ক্লাবটির পক্ষ থেকে কোনো রিপোর্ট বা অভিযোগ দায়ের হয়নি বলেও জানান বনানী ক্লাবের সেক্রেটারি।

এর আগে, ১৬ জুন সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর ইকবাল অভিযোগ করে বলেন, গত ৮ জুন ছোট্ট একটি অভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছিল। আমাদের ক্লাব বন্ধের সময় কয়েকজন লোক এসেছিলেন ক্লাবে প্রবেশের জন্য। যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হাফপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরা, আরও একজন পুরুষ এবং দু’জন মেয়ে ছিলেন। তখন আমাদের ফুড এডভাইজার দেখে বলেন, আপনারা তো ক্লাবের নিয়ম ভাঙ্গ করেছেন। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, তারা ক্লাবের যে সদস্যদের মাধ্যমে ক্লাবে আসেন তিনিও তাদেরকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা যেতে চায়নি। পরে বাধ্য হয়ে আমাদের সেই সদস্য-ই চলে যান। এরই মধ্যে (পরীমনিসহ সঙ্গীরা) তারা জাতীয় জরুরি সেবা- ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এলে তারা ক্লাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাদেরকে হেনস্থার অভিযোগ করেন। কিন্তু বাস্তবে তখন আমাদের তেমন কেউ ছিল না। ঘটনার সময় তখন রাত ১টা থেকে দেড়টা বাজে। বরং তাদের একজন আমাদের ক্লাবের ১৫টি গ্লাস, ৯টি এসট্রে, বেশ কিছু হাফ প্লেট ভাংচুর করেন (ছুঁড়ে মারেন)। এ ঘটনার পর আমরা জানতে পারি তার নাম পরীমনি। পুলিশ এসেও এর সত্যতা পায়। পরে পুলিশ ঘটনার বিষয়ে তাদের ঊর্ধ্বতনদের জানায় এবং ক্লাব থেকে তাদের (পরীমনি ও সঙ্গীদের) চলে যেতে বলেন।

আরবিসি/২৩ জুন/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category