আরবিসি ডেস্ক : ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭ দরিদ্র দেশগুলোকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও সে বিষয়ে উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেছেন, “টিকা নিয়ে বড় বড় পণ্ডিতেরা কত কি বললেন না? এই যে, জি-৭ দেশগুলো কিছুদিন আগে বৈঠক করে বলেছে, তারা ১০০ কোটি ডোজ টিকা দরিদ্র দেশগুলোকে দেবে।
“এ নিয়ে শুধু গল্পই শুনতেছি। কিন্তু দেওয়ার জন্য তো কোনো আগ্রহ দেখি না। আমি বলি মুলা দেখাচ্ছে সবাই। তবে টিকার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ে নিজের কক্ষে টিকা প্রাপ্তি নিয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে এরকম মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ।
টিকা নিয়ে কোনো সুখবর আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে সবাই। সবচেয়ে বড় সমাধান হবে যখন আমরা টিকা তৈরি করব। নিজেরা টিকা তৈরি করলে আর অন্যের দিকে চেয়ে থাকতে হবে না।
“ধনী দেশগুলো টিকা নিয়ে বসে রয়েছে। তাদের যত জনসংখ্যা তার থেকে তাদের কাছে টিকা বেশি রয়েছে। টিকা এখন দর কষাকষির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ভ্যাকসিন একটা মজার জিনিস। সবাই আমাদের কাছে টিকা বিক্রির জন্য আসছে। সাংবাদিক, সাহিত্যিক, গায়ক, ব্যবসায়ী সবাই এখন টিকা ব্যবসায়ী।
“অনেকে বলে টিকা দেব, কিন্তু কেউ দেয় না। আবার দেওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করে যে, অমুক জিনিসে আমাকে সমর্থন দেবেন কিনা। এখন দেখা যাচ্ছে, এটিকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।”
এ বিষয়ে উদাহরণ দিতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “একটা মজার কাহিনী বলি- আমেরিকার অনেক ব্যক্তিবিশেষ আমাদের জানিয়েছেন, অমুক লোক অনেক টিকা দিতে পারবেন। তারা রাশিয়ান টিকার ডিলারশিপ পেয়েছে। কিন্তু রাশিয়া সরকার আমাদের জানিয়েছে, তাদের কোনো ডিলারই নাই।”
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে অন্য টিকার পাশাপাশি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকাও সরবরাহ করবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “উন্নত দেশগুলো প্রয়োজনের বেশি ভ্যাকসিন নিয়ে বসে আছে। সেজন্য তাদের বলেছি, বাড়তি ভ্যাকসিন নষ্ট না করে আমাদের দিয়ে সহযোগিতা করতে।
“যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আগেই চেয়েছি। আমরা আশাবাদী তারা আমাদের এটা দেবে।”
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “অনেক ধনী দেশই মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মুখে মুখে মানবতার কথা বললেও গত ৪ বছরে মিয়ানমারের সঙ্গে ৩ থেকে ১৫ শতাংশ বাণিজ্য বাড়িয়েছে।”
‘অনেক ধনী দেশ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ব্যাংক গ্যারান্টি’ দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরবিসি/২৩ জুন/ রোজি