আরবিসি ডেস্ক : মানবপাচার আইনে করা মামলায় আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের অন্যতম হোতা নদী আক্তার ইতি ওরফে জয়া আক্তার জান্নাত ওরফে নূরজাহানসহ (২৮) সাতজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
নদী ছাড়া রিমান্ডে যাওয়া অন্যরা হলেন- মো. আল-আমিন হোসেন (২৮), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), আমিরুল ইসলাম (৩০), পলক মণ্ডল (২৬), মো. তরিকুল ইসলাম (২৬) ও বিনাশ শিকদার (৩৩)।
মঙ্গলবার (২২ জুন) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের অন্যতম হোতা নদী আক্তার ইতি ওরফে জয়া আক্তার জান্নাত ওরফে নূরজাহানসহ মানবপাচার চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
পুলিশ বলছে, পাচারকারীদের হাতে পড়েছেন এমন বেশ কয়েকজন এরই মধ্যে জানিয়েছেন নদীর মাধ্যমে ভারতে চাকরির অফার পেয়েছিলেন তারা। সেখানে গিয়ে তারা বুঝতে পারেন তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এই চক্রে নদী বড় ভূমিকা রেখেছেন।
২০০৫ সালে শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজীব হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে তার স্বামী রাজীব বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। এরপর তিনি ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন পাচারকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা।
নদীর কাছ থেকে ভারতীয় দুটি আধার কার্ড, পাসপোর্ট, একটি পুরাতন ডায়েরি ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া দুই তরুণীর ৮টি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে গোয়াগামী বিমানের দুটি টিকিটের প্রিন্টেড কপি জব্দ করা হয়েছে।
তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুক বলেন, ‘নারীপাচার চক্রের অন্যতম হোতা নদী আক্তার ইতি ওরফে জয়া আক্তার জান্নাত ওরফে নূরজাহান ভারত, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে নারীপাচার চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন। ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার।’
তিনি বলেন, ‘টিকটক বাবু চক্রের সদস্য হিসেবে নদী দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। টার্গেট করা নারীদের ফাঁসাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি নিজে যোগাযোগ করেন। ভারতে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা অন্তত পাঁচ তরুণী ঢাকার হাতিরঝিল থানায় যে মামলা করেছেন, সেখানেও আসামির তালিকায় নদীর নাম রয়েছে। সর্বশেষ শনিবার ভারতফেরত তিন তরুণী মামলা করেন, যাতে নদীকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।’
এডিসি হাফিজ আল ফারুক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পুলিশের তদন্তেও নদীর নাম উঠে এসেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের আরও তথ্য জানা যাবে।’
আরবিসি/২২ জুন/ রোজি