নওগাঁ প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের তথা দেশের সর্ববৃহৎ আমবাজার নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী সাপাহার। ইতোমধ্যে নানান জাতের আম কেনা বেচার মধ্যে দিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জমে উঠেছে আমের এ বিশাল হাট। মৌসুমের শুরু থেকে আমের দাম তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন আম চাষীরা।
গত বছরের তুলনায় এবছরে আমের উৎপাদন অনেকটাই বেশি হলেও আমের বাজারমূল্য কম বলে দাবী করেছেন আমচাষীরা।
চলতি বছরে এ উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদন হিসেবে প্রায় ১৫ শ’ কেটি টাকার আম বানিজ্য হতে পারে নওগাঁ জেলার এ আমবাজার থেকে। কিন্তু চলমান সময়ে আমের বাজারদর কিছুটা নিম্নমূখী হওয়ার ফলে অনেকটাই হতাশার ছাপ পড়েছে আমচাষীদের মনে।
শুক্রবার সকাল থেকে সরেজমিনে আমবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সারি সারি ভ্যানের উপর নানা জাতের আমের পসরা নিয়ে বসে রয়েছেন আম চাষীরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাত হলো ল্যাংড়া, নাগফজলী, হিমসাগর, আম্রপালি অন্যতম। আম কেনার জন্য বাইরের ব্যাপারী থাকলেও ক্রেতারা পাচ্ছেন না তার ন্যায্যমূল্য বলে অভিযোগ করছেন তারা।
প্রতিমণ ল্যাংড়া ৮শ থেকে ১২শ, নাগফজলী ১ হাজার থেকে ১২শ’, হিমসাগর ১৪ শ’-১৫শ, আম্রপালী দেড় হাজার থেকে ২২শ টাকা মণ দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আম চাষের খরচ হিসেবে চলতি বাজারমূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম বলছেন আম চাষীরা।
জেলার বিখ্যাত জাতের আম আম্রপালি বাজারজাত করার জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত সময় ২২ জুন নির্দেশনা রয়েছে। তবে বর্তমানে অনেকেই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের অনুমতিক্রমে পরিপক্ক আম বাজারজাত করছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস। গত বছরে আমম্রালি জাতের আম সন্তোষজনক মূল্যে বিক্রয় হয়েছে। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতেই এ জাতের আমের বাজার মূল্য দেখে অনেকটা হতাশ হয়েছেন আম চাষীরা।
আম বিক্রি করতে আসা আমচাষী নাসির উদ্দীন জানান, তার বাগানের প্রায় ১০ মণ ল্যাংড়া আম বিক্রয় করতে এসেছিল। আমার আমের কালার একটু খারাপ থাকার জন্য প্রতিমণ আম বিক্রি করেছেন সাড়ে ৭শ’ টাকা মণ দরে। অথচ এ জাতের আম গত বছরে ২৪-২৫ শ টাকা দরে বিক্রি করেছিল। এভাবে বাজারদর কম থাকলে আমরা চাষীরা সার বিষের দোকানের বাঁকী পরিশোধ করে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।
অপর আম বিক্রেতা হাববিুর রহমান বলেন, এ বছরে আমের দাম নেই। কম আম বিক্রি করতে আসলে অনেক সময় ভ্যান ভাড়া দিতেই সব টাকা ফুরিয়ে যায় বাজার করার মত পয়সা হাতে থাকেনা তাদের।
সবমিলিয়ে চলতি বছরে আমের বাজারদর না বাড়লে কৃষকেরা অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করছেন আমচাষী ও অভিজ্ঞমহল।
আরবিসি/১৮ জুন/ রোজি