• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারে নতুন যুদ্ধ, জঙ্গলে পালাচ্ছেন মানুষ

Reporter Name / ১০০ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : ‌‘ঘন জঙ্গলে কিছু শিবিরে কয়েক ডজন মানুষ গাদাগাদি করে বাস করছেন। আবার কিছু শিবিরে হাজার হাজার মানুষ। বর্ষাকালীন বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে প্লাস্টিকের নিচে হাজারও মানুষ একসাথে ঘুমাচ্ছেন এসব শিবিরে। দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধিও।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটিতে যে অস্থিরতা শুরু হয় তা প্রশমনের কোনো আলামত নেই। বরং এই অস্থিরতা আরও বেড়েছে দেশটির সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে; যেখানে স্থানীয় জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। এই সংঘাত থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে বন-জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন। থাইল্যান্ড ও চীন সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাজ্যগুলোর বনাঞ্চলের শিবিরে দেখা গেছে ওই চিত্র।

 

কর্তৃপক্ষের শাস্তির ভয়ে পুরো নাম প্রকাশে অনীহা জানিয়ে ২৬ বছর বয়সী ফোং বলেন, ‌‘শিবিরগুলোতে কিছু কিছু শিশু ডায়রিয়ায় ভুগছে। এখানে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া বেশ কঠিন। কিছু মানুষ চাল অথবা অন্য কোনো খাবার সাথে আনারও সুযোগ পাননি।’

জঙ্গলের একটি গাছের নিচে ত্রিপল টানিয়ে সেখানে ঘুমাচ্ছেন তিনি। সেই ছবি শেয়ার করে রয়টার্সের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রার্থনা করছি।’

 

২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযানের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর বর্তমানে দেশটিতে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের এই সংখ্যাকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বলছে জাতিসংঘ। তবে এ বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কোনো মন্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স।

দেশটির গণতন্ত্রকামীদের নতুন গঠিত পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ও কারেন্নি ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তকমা দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। গত মাস থেকেই মিয়ানমারের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা। এই গোষ্ঠীগুলোর হামলায় প্রায়ই মিয়ানমার সামরিক বাহিনীতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

 

জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া লোকজনের অনুরোধের পর মঙ্গলবার পিপলস ডিফেন্স ফোর্স মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা সাময়িক স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। হামলা অব্যাহত থাকলে জঙ্গলে আশ্রিত লোকজনের বাড়ি ফেরা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোষ্ঠীটি।

দেশটিতে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কেন্দ্রে থাকা ডেমোসো শহরের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের বাসিন্দা জন ক্যানায়ডি বলেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় কিছু মানুষ চাল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী আনার জন্য তাদের বাড়িতে গেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে থাকার চেয়ে শিবিরে থাকাই এখন নিরাপদ। সামরিক বাহিনীবিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় দেশটির জান্তা সরকারের অপরাধীর তালিকায় নাম রয়েছে ক্যানায়ডির।

আরবিসি/১৭ জুন/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category