• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন

বাগমারার সর্বত্র উন্নয়নের ছোয়া

রোজিনা সুলতানা রোজি / ৩৭০ Time View
Update : রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১

বাগমারায় সর্বত্র এখন উন্নয়নের ছোয়া। শতশত কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ, ব্রিজ কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপজেলা পরিষদ ও ইউপি ভবনসহ প্রায় শতাধিক উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করেছে বাগমারা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) এরি মধ্যে এলাকাবাসীর নজর কেড়েছে। কাজের গুনগত মান বজায় রাখা ও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করায় প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার মডেল প্রতিষ্ঠান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। স্থানীয়ন এমপি প্রকৌশলী এনামুল হকের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সুফল ভোগ করছেন এখন বাগমারার মানুষ।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা য়ায়, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে শিক্ষা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে বাগমারায় এলজিইডি ব্যাপব ভূমিকা রেখে চলেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের একক প্রচেষ্ঠায় এ উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন হতে চলেছে। বিগত বছর ও চলতি বছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৩০টি বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

গত অর্থবছর এ উপজেলায় চাঁনপাড়া, পূর্ব দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, বোয়ালীয়া, সুজনপালসা, বীরকয়া তীরমোহনী ও বাজেকোলাসহ বেশ কিছু স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কাজের গুনগত মান ঠিক রেখে নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে এসব স্কুলের নির্মাণ কাজ শেষ করায় তাদের ছেলে মেয়েদের দুর্ভোগ কমে গেছে। তারা আগের ভাংগাচোরা ভবনের পরিবর্তে নতুন ভবনে বসে লেখাপাড়ায় সুযোগ পেয়েছে।

একই ভাবে উপজেলার বামনকয়া, ঝিকরা, মোহাম্মাদপুর, ধামিনকৌড়, বারুইপাড়া-২, মধুপুর মোহনপুর, ভবানীগঞ্জসহ ২৩টি স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই এসব স্কুলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশবাদ ব্যক্ত করেন উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন।
চাঁনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক আব্দুর রাজ্জাক জানান, আগে টিনের বেড়া ও টিনের ছাউনির নিচে তাদের ক্লাস করতে হত। তখন প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীরা ছটপট করত। সামান্য বৃষ্টিতে টিনের ছিদ্র দিয়ে ঘরে পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের বই খাতা ভিজে যেত।
ভবানীগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা রহমান জানান, বর্তমান সরকারের সময় এলজিইডির মাধ্যমে তার বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি সংস্কার করা হয়েছে এবং একই সাথে চলতি অর্থ বছরে আরো একটি নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এতে তার স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে তিনি জানান।

শিক্ষা ছাড়াও এ উপজেলায় যোগাযোগ ক্ষেত্রে এলজিইডির হাত ধরে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে উপজেলার ৩টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুগুলো হলো বারনই নদীতে তালতলি সেতু, কম্পোনদীর উপর মাধনাগর সেতু, ফকিরানী নদীর উপর পীরগঞ্জ ও জোলাপাড়া সেতু জনগনের চলাচলের জন্য উন্মক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এসব সেতু নির্মাণের ফলে প্রায় দুই লক্ষ লোকের যাতায়াত ব্যবসা বানিজ্য করার বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

পীরগঞ্জের কৃষক কলিমুদ্দিন, ব্যবসায়ী আফজাল সহ ২০-২৫ জন জানান, বর্তমান সরকারের সময়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আগে কখনই হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা পীরগঞ্জ সেতুটি নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছি। কিন্তু বর্তমান সরকার আমাদের দাবীটি পূরন করায় আমরা কৃষি পন্যের বিপননসহ ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা ভোগ করছি। তারা জানান, এ সেতুটি নির্মাণের ফলে প্রায় পঞ্চাশ হাজার লোকের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষা ও যোগাযোগ ছাড়াও স্থানীয় এলজিইডির মাধ্যমে এ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদেই নির্মিত হয়েছে নতুন ইউপি ভবন। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের কাজে এসেছে নতুন গতি।

যোগিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, মাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম আলী আসকান ও হামিরকুৎসার ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, তাদের ইউনিয়নে ইউপি ভবন ছাড়াও এলজিইডি’র মাধ্যমে গ্রামীন রাস্তা, কালভার্টসহ বেশ কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ হয়েছে। কাজগুলোর গুনগত মান ভাল হওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলীকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
উপজেলাব্যাপি এসব ব্যাপক কার্যক্রম ছাড়াও উপজেলা পরিষদের ভবনটিও নির্মাণ করা হয়েছে এলজিইডি’র মাধ্যমে। প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যায়ে উপজেলা অডিটোরিয়ামসহ দৃষ্টিনন্দন উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়া এই উপজেলার আনাচে কানাচে ছোট বড় পাকা রাস্তা নির্মাণ করে এলজিইডি জনগনের ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। উপজেলার মাড়িয়া, শ্রীপুর, গনিপুর, বাসুপাড়া, গোয়ালকান্দি, বড়বিহানালী সহ বেশকিছু ইউনিয়নে বড় বড় পাকা রাস্তার নির্মাণ কাজ ছাড়াও গোটা উপজেলাব্যাপি বিভিন্ন মানের ছোট(ডাল রাস্তা) নির্মাণ করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন জানান, স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকে ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় বাগমারার শিক্ষা ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলজিইডি ব্যাপক উন্নয়ন করে চলেছে। প্রতিটি কাজ সঠিক ভাবে গুনগত মান ঠিক রেখে করা হয়েছে। আরো বেশ কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ চলমান রয়েছে।

তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এ করোনা কালে জীবনের ঝুকি নিয়ে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছি। কোথাও কাজের গুনগত মান ও সময় নিয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হয় না। এসব কারণে স্থানীয় কিছু স্বার্থন্মেষী মহল নানান ভাবে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানান, উপজেলা এলজিইডি কাজের মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছে। তাদের কাজের মান নিয়ে কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত হয়নি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে এলাকার শিক্ষা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে এলজিইডি ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। এসব কাজের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে এলাকাবাসী।

আরবিসি/১৩ জুন/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category