আরবিসি ডেস্ক : সবগুলো ধাপ শেষ করার পর গত বছরের ডিসেম্বরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে দুই হাজার ১৫৫ জন প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়। চূড়ান্তভাবে বাছাই হওয়ার পর গত পাঁচ মাসেও তারা নিজ কর্মস্থলে যোগদান করতে পারেননি।
এদিকে প্রত্যাশিত চাকরি পাওয়ার পরও দীর্ঘদিন ধরে তাতে যোগদান করতে না পারায় সুপারিশকৃত অনেক প্রার্থীর মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাসের এই দুর্দিনে অনেকে কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন।
সুপারিশকৃতদের একজন আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) সমস্ত পদক্ষেপ শেষ করার পর ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য দুই হাজার ১৫৫ জনকে সুপারিশ করে। তবে গত পাঁচ মাসেও আমাদের কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়নি। ফলে আমরা এখনও আমাদের কর্মস্থলে যোগদান করতে পারিনি। বিষয়টি আমাদের অনেকের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে।’
অন্য একজন নির্বাচিত প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের দেশে চাকরি পাওয়া, বিশেষ করে সরকারি চাকরি পাওয়া খুব কঠিন। আবার, চাকরি পাওয়ার পরও যখন কাউকে দীর্ঘদিন ধরে বেকার থাকতে হয়, তখন এটি আরও বেদনাদায়ক।’
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, তিন মাস আগে সুপারিশকৃত প্রার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে যাচাই প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সারাদেশে ৩১১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। ২০১১ সালে শেষবারের মতো ওই স্কুলগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল।
পরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিসিএস নন-ক্যাডার পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অনেক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। তবে বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্য থেকে পর্যাপ্ত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছিল না। এছাড়া বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা থেকে আসা বেশিরভাগ শিক্ষকই শেষ পর্যন্ত অন্য চাকরিতে চলে যান। ফলস্বরূপ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের ঘাটতি রয়ে গেছে।
এসব দিক বিবেচনা করে পিএসসি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তির লিখিত পরীক্ষা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার পর পিএসসি গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে এবং দুই হাজার ১৫৫ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘পিএসসির পাঠানো তালিকাভুক্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ হলে তাদের নিয়োগ দেয়া শুরু হবে। করোনার কারণে এ কার্যক্রম শেষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে জানান তিনি।’
আরবিসি/০৯ জুন/ রোজি