• বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

সরকারি জনবল নিয়োগের চাকা সচলের আভাস

Reporter Name / ১৪৩ Time View
Update : শনিবার, ৫ জুন, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির প্রভাব কাটিয়ে সরকারি জনবল নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় এক বছর সরকারি নিয়োগ কার্যক্রম স্থবির থাকার পর নতুনভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম মন্ত্রণালয়, সরকারি দফতর-সংস্থার মাধ্যমে দেয়া হলেও তা এখনো স্থগিত রয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন ধাপে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে লকডাউন ও সরকারি বিধিনিষেধ জারি করা হয়। মাঝে বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হলেও এ বছর নতুন করে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে এই বিধিনিষেধ আবারও জারি করা হয়। তা এখনো বহাল থাকায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ দুই শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগও রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানেই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার পরও নিয়োগ কার্যক্রম ঝুলে আছে। কোনো কোনো মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও নেয়া হচ্ছে না পরীক্ষা।

করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি নিয়োগের চাহিদা কমে গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে চাহিদা পাঠানো হয়েছে তার ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করে যোগ্যদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর-সংস্থায় জনবল নিয়োগের চাহিদা এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি

দেখা গেছে, নিয়োগ বিধি এবং মামলা জটিলতার কারণেও অনেক শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এসব নিয়োগ বিধি সংশোধন ও মামলা নিষ্পত্তির প্রাথমিক কাজ শেষ করতেই কেটে যাচ্ছে বছরের পর বছর। এদিকে ফি দিয়ে আবেদন করেও পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে অসংখ্য প্রার্থীর। ফলে তাদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা। তার ওপরে করোনা পরিস্থিতি যুক্ত হওয়ায় এ সঙ্কট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এদিকে গত বছরের মার্চে করোনা পরিস্থিতি শুরু হলেও তার আগের মাসে (ফেব্রুয়ারি) প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে ২০টি মন্ত্রণালয়, দফতর ও সংস্থায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পরের মাসে (মার্চে) ১৫টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও সে বছরে নার্স ছাড়া আর তেমন উল্লেখযোগ্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের শুরুতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে জানুয়ারি থেকে আবারও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করে পিএসসি। কিন্তু গত দুই মাস ধরে করোনার প্রকোপ আবারও বেড়ে যাওয়ায় নিয়োগ কার্যক্রমে অনেকটা স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।

তবে চাহিদা মোতাবেক সরকারি জনবল নিয়োগে পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (নন ক্যাডার) নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি নিয়োগের চাহিদা কমে গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে চাহিদা পাঠানো হয়েছে তার ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করে যোগ্যদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর-সংস্থায় জনবল নিয়োগের চাহিদা এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে চূড়ান্তভাবে পাস করা প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।’

বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোট আকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেসব নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে সেগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু করা হচ্ছে। বেশি আকারে আবেদনকারী হলে ধাপ ধাপে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি সব স্তরের নিয়োগ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করে তোলা হবে

অন্যদিকে করোনার কারণে সিদ্ধান্ত হয়েও আটকে থাকা সরকারি নিয়োগে প্রার্থীদের বয়সসীমায় ছাড় দেয়া হয়েছে। তবে বিসিএসের বেলায় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না। যেসব মন্ত্রণালয় বা অধীন প্রতিষ্ঠান সরাসরি নিয়োগে গত বছরের ২৫ মার্চের আগে নিয়োগের জন্য ছাড়পত্রসহ প্রস্তুতি নিয়েও করোনার কারণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি, এখন সেসব বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে গত বছরের ২৫ মার্চ তারিখ ধরতে বলেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সাধারণত বয়সসীমা ৩০ বছর। এখন যাদের বয়স গত বছরের ২৫ মার্চ ৩০ বছর হয়ে গেছে, তারাও ওইসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন।

আসন্ন ও চলমান নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, ‘সরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে বিপুল পরিমাণে প্রার্থী আবেদন করে থাকেন। করোনার কারণে তাদের একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে অনেক দফতর-সংস্থার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও তা স্থগিত রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোট আকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেসব নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে সেগুলোও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুরু করা হচ্ছে। বেশি আকারে আবেদনকারী হলে ধাপ ধাপে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি সব স্তরের নিয়োগ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করে তোলা হবে।’

আরবিসি/০৫ জুন/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category