স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা : রাজশাহীর বাঘার পদ্মার চরাঞ্চলে কলার বাগান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিদার ব্যাপারী ও মজনুদর্জি পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩ জন আহত এবং ১ জন নিহত হওয়ার আলোচিত ঘটনাটি ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারী মাসে একটি পক্ষের উপর এলোপাতাড়ী গুলিবর্ষন এবং ঘটনার ২৬ দিন পর রাতের আধারে অপর একজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পুলিশ সে সময় দুটি মামলায় তিনজনকে আটক করেছে। বর্তমানে রহস্য জনক কারণে আর কোন আসামীকে আটক করেছেনা। ফলে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা। এতে আতঙ্কে রয়েছেন বাদী পক্ষ।
চরাঞ্চলের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ ভুক্তভোগীদের দাবি, পৃথক দুটি মামলা রাজশাহী র্যাব কিংবা ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হোক। চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, ফসলী জমির আগাছা পোড়াতে গিয়ে কলার বাগান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী মজনুদর্জি ও তার লোকজননের উপর গুলি করে দিদার ব্যাপারী ও তার সহযোগীরা। যাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারি ইউনিয়নের বাংলা বাজারে গ্রামে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে । অথচ পুলিশ রহস্য জনক কারণে তাদের গ্রেফতার করছে না। ফলে উল্লেখিত আসামীরা বাদী পক্ষকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়াসহ তাদের ঘর-বাড়ি ও ফসল লুট করার অভিযোগ তুলে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে চলেছেন। অথচ পৃথক দুটি মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তাদের একেক জনের নামে বিভিন্ন থানায় ৪ থেকে শুরু ১০-১২ টি করে মাদক মামলা রয়েছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, আমি উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিং-এ ঘটনাটি উপস্থাপন করেছি। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বিষয়টি পুলিশের উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে আস্বস্ত করেছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, এক সময় চরাঞ্চলে রাজত্ব করত পান্না ও লালচান বাহিনী। তাদের সময় সাধারণ কৃষকের ফসল ও গরু মহিষ লুট থেকে শুরু করে এক বছরে ২০ টি হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে তত্বাবধায়ক সরকার আমলে আইন শিঙ্খলা বাহীনির হাতে তারা দু’জনই নিহত হন। বর্তমানে দিদার ব্যাপারী পক্ষ নিয়ে লালচাঁন ও পান্নার জায়গা দখল করতে চলেছেন আব্দুর রশিদ ও জিয়া মন্ডল নামে দুই প্রভাবশালী। এরা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোরাসহ মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত বলে অনেকেই উল্লেখ করেন।
বাঘা থানা অফিসার ইনচাজর্ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশের কোন গড়িমসি নাই। গুলি বর্ষনের ঘটনায় প্রথম দিন আমরা দু’জন আসামীকে আটক করেছি। এর মধ্যে আব্দুর রশিদ নামে এক আসামীর বাড়ী থেকে ১২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করি। অপর দিকে ইব্রাহিম হত্যা মামলার ২ নং আসামী দিলা ব্যাপারীকে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার বার মাইল এলাকা থেকে গ্রেফতার করি। অন্যান্য আসামীদের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাজার বাজার এলাকা হওয়ায় আইনি জটিলতা সহ কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাদের আসামীদের আটক করার বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের সহায়তা চেয়েছি।
আরবিসি/০৫ জুন/ রোজি