• রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]
শীর্ষ সংবাদ

নি:স্ব হচ্ছি তবু থামছি না

রোজিনা সুলতানা রোজি / ৫৩১ Time View
Update : শুক্রবার, ৪ জুন, ২০২১

‘করোনা’ এখন বিশ্বের সবচেয়ে একটি আতঙ্কের নাম। এক ভয়ঙ্কর অদৃশ্যশক্তি। এর ভয়াল থাবায় গ্রাস হচ্ছে সারা বিশ্বই। যার কালো থাবায় বিশ্ব আজ টালমাটাল। করোনার কাছে ধনী-গরীব, ছোট-বড় সবাই যেন অপরাধী। সবাইকে আক্রমন করছে। যার ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না দুগ্ধ শিশু থেকে যে কোনো বয়সের মানুষ।

মহামারি করোনায় প্রতিদিনই সারাবিশ্বে আক্রান্ত হচ্ছেন কয়েক লাখ মানুষ। প্রাণ হারাচ্ছেন কয়েক হাজার। একবার কাউকে ছুঁতে পারলেই হয়তো প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে নয়ত সামজিক, মানষিক ও অর্তনৈতিকভাকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে। প্রাণঘাতি করোনা থেকে বাঁচতে সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশ সরকারও নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। করোনা প্রতিরোধে টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করেছেন কয়েক লাখ মানুষের। বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন স্বাস্থ্যবিধিও। তার মধ্যে সামাজিক দূরুত্ব ও বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানিটাইজসহ কঠোর লকডাউন। লকডাউন মেনে চলতে নেয়া হয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা।

গণজমায়েত হয় এমন জায়গাগুলোতে চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাস্তায় জোরদার রয়েছে পুলিশের টহলসহ সচেতনতা মাইকিং। কিন্তু এত কিছুতেও মানুষের যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আগ্রহ নেই। শপিংমল, রেস্তোরাগুলোতেও জনসমাগম দিব্যি চলমান। হ্যান্ড স্যানিটাইজ তো দূরে থাক মাস্ক ব্যবহার করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা থুতনীর নীচে লক্ষণীয়। চা-ষ্টলগুলো খোলা থাকলেও বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। পুলিশ দেখলেই সব বন্ধ কিন্তু তারা চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আগের অবস্থানে। যেখানে-সেখানে মানুষ গাদাগাদি করে আড্ডার আসর জমাচ্ছে। এতে একজনের শরীর থেকে অন্য শরীরে সহজেই ঢুকে পড়ছে প্রাণঘাতি করোনা। আর একবার কারো শরীরে জায়গা নিতে পারলে তার প্রাণ পর্যন্ত কেড়ে নিচ্ছে।

কিন্তু মানুষ মনে হচ্ছে প্রাণ দিতে প্রস্তুত তবু স্বাস্থ্যবিধি মানতে রাজি নয়। এতে মানুষ নিজেরা যেমন সংক্রমিত হচ্ছেন অন্যদেরও সংক্রমিত করছেন। তাতে স্থানীয় এলাকা ছাড়িয়ে সারা দেশের মানুষকে হুমকিতে ফেলছেন।

বিভাগীয় শহর রাজশাহীতেও হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। এ পরিস্থিতিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা পালন হচ্ছে না। এ কারনে ক্রমেই নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতিতে রোগীদের নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে সর্বশেষ শুক্রবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আরও ১৬ জন মারা গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টার মধ্যে তারা মারা যান। এযাবৎ রামেক হাসপাতালে করোনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি।

গত ২৪ মে দুপুর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ৪৬ জন। অন্যরা মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে।

করোনা রোগী ভর্তি আর প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহী মেডিক্যালজুড়ে এক হাহাকার পরিস্থিতি চলছে রোগীর স্বজনদের মধ্যে। করোনা ঝুঁকি নিয়েই আক্রান্ত স্বজনদের নিয়ে দিনরাত একাকার করছেন অনেকে।

এতকিছুর পরেও আমরা সচেতন হচ্ছি না। করোনার ভয়াল থাবায় ক্রমেই নি:স্ব হচ্ছে মানুষ, তবুও সচেতনার কোনো বালাই নেয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে মনে হচ্ছে যেন সবদিক থেকে নি:স্ব হচ্ছি আমরা, তবুও থামছি না। ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় কঠোর বার্তাতেও থামনো যাচ্ছে না কাউকেও। আর কবে সচেতন হব আমরা??

আরবিসি/০৪ জুন/ রোজি

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category