স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও নয়জন মারা গেছেন। তাদের সবাই করোনা পজিটিভ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে গত ২৪ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ১১ দিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৭৭ জন। এই ৭৭ জনের মধ্যে ৪৬ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছেই। আগের দিনের তুলনায় রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৪ জনে। আগের দিন ভর্তি ছিলেন ২২০ জন।
উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নয়জনের মধ্যে করোনার ‘হটস্পট’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচজন, রাজশাহীর দুজন, নওগাঁ ও পাবনার একজন করে আছেন। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) পাঁচজন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন, ১৬ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন। তাঁদের মরদেহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঈদের পর থেকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মৃত্যু। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এই সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। শুধু গত ২৪ মে দুপুর থেকে ৩ জুন পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা সংক্রমিত ছিলেন ৪৬ জন। অন্যরা করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ মে ১০ জন, ২৫ মে ৪ জন, ২৬ মে ৪ জন, ২৭ মে ৪ জন, ২৮ মে ৯ জন, ৩০ মে সর্বোচ্চ ১২ জন, ৩১ মে ৪ জন, ১ জুন ৭ জন, ২ জুন বুধবার ৭ জন এবং সবশেষ আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত আরও ৯ জন মারা গেলেন। এই ১১ দিনে বিভাগের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় মৃতের হার বেশি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে হাসপাতালে প্রতিদিনই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা রোগী ও করোনা উপসর্গের রোগী। হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২৯ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১১ জন, নওগাঁর তিনজন ও পাবনার ১ জন। এ নিয়ে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ভর্তি আছেন করোনার প্রায় দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২২৪ জন রোগী। এর আগের দিন ভর্তি ছিলেন সর্বোচ্চ ২২০ জন রোগী। ২২৪ জনের মধ্যে রাজশাহী জেলার সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি আছেন ১০১ জন আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৬ জন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় হাসপাতালে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি ছিলেন ১৩৬ জন। এবার প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, যাঁদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন কম, অবস্থা খারাপ, তাঁদেরই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।
আরবিসি/০৩ জুন/ রোজি