আরবিসি ডেস্ক : মো. নঈম (৩৭) ও তসলিমা ঝরনা (২৮) দম্পতি থাকেন চট্টগ্রাম রেলস্টেশন কলোনি এলাকায়। তাঁদের একটি শিশুসন্তান আছে। নাম ফারহান। সুলতানা বেগম নামের এক প্রতিবেশী নারী প্রায়ই তাঁদের বাসায় আসতেন। বাসায় এসে তিনি ফারহানকে আদর করতেন। এভাবে আদর করার ছলে সাড়ে পাঁচ মাস আগে ফারহানকে চুরি করে নিয়ে যান সুলতানা। পরে তিনি শিশুটিকে সিলেটে মোহাম্মদ ইসমাইল নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
সোমবার রাতে সিলেটের হবিগঞ্জের বাহুবল এলাকা থেকে আট মাস বয়সী শিশু ফারহানকে উদ্ধার করে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন সুলতানা ও ইসমাইল।
পরিবার ও পুলিশ জানায়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর শিশু ফারহান বাসা থেকে চুরি হয়। পরে মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে মাত্র ৯০০ টাকা দেয় ফারহানের দরিদ্র পরিবার। দাবিমতো টাকা না পেয়ে পাঁচ হাজার টাকায় হবিগঞ্জের বাহুবলের ইসমাইলের কাছে ফারহানকে বিক্রি করে দেন সুলতানা। এ ঘটনায় গত বছরের ডিসেম্বরেই চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন আজ মঙ্গলবার বলেন, পূর্বপরিচয় থাকায় সুলতানা প্রায়ই নঈম-তসলিমাদের বাসায় আসতেন। আদরের ছলে তিনি শিশু ফারহানকে চুরি করে নিয়ে যান। পরে বাহুবলের ইসমাইলের কাছে শিশুটিকে বিক্রি করে দেন। তিনি শিশুটিকে লালনপালন করছিলেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বাহুবল থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
বিজ্ঞাপন
ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার সুলতানা শিশু পাচারের সঙ্গে জড়িত কি না, তা জানতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। এ জন্য তাঁকে আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
শিশু ফারহানকে উদ্ধারের পর আজ ভোরে মা তসলিমার কোলে তাকে তুলে দেয় পুলিশ। সন্তানকে ফিরে পেয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে রাখেন মা তসলিমা। তসলিমা মানুষের বাসায় কাজ করেন। তাঁর স্বামী নঈম অটোরিকশা চালান। সন্তান ফেরত পেয়ে তাঁরা অত্যন্ত আনন্দিত।
আদর করার ছলে কেউ যাতে শিশু চুরি বা অপহরণ করতে না পারে, সে জন্য অভিভাবকদের সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন।
আরবিসি/০১ জুন/ রোজি