আরবিসি ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ (বাজেট) অধিবেশন আগামীকাল বুধবার (২ জুন) বিকেল ৫টায় শুরু হবে। এই বাজেট অধিবেশন হবে মোট ১২ কার্যদিবসের।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, বয়োজ্যেষ্ঠ ও অসুস্থ এমপিদের সংসদ অধিবেশেনে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তবে কোরাম (৬০-৮০ জনের উপস্থিতি) যেন পূর্ণ হয়, সেভাবে রোস্টার করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্যদের সংসদ ভবনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। দর্শনার্থীর জন্য সংসদ ভবনে কোনো পাস দেওয়া হবে না। শুধু ৩ জুন বাজেট উত্থাপনের দিন সংসদ বিটের ৪৭ জন সাংবাদিকদের সংসদে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। এজন্য আজ সকাল ১০টা থেকে তাদের করোনা টেস্ট করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের এটা টানা ১৩তম বাজেট। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর তৃতীয় বাজেট পেশ। তুলনামূলক তরুণ এমপিদের সংসদে উপস্থিত হওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
সংসদে আসা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এমপিদের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের নমুনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে। নমুনার ফল করোনা নেগেটিভ হলেই কেবল তারা সংসদে আসতে পারবেন।
সংসদ ভবনে সবার হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হবে। সংসদ অধিবেশন কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলা হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের তালিকা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় যারা করোনা নেগেটিভ হবেন, তারা তালিকা অনুযায়ী সংসদ অধিবেশনে যোগ দেবেন। সংসদের আলোচ্য সূচির ওপর বক্তব্য দেবেন, এমন ৮০ থেকে ৯০ জনের তালিকা করা হবে।’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক সংসদে আসবেন ২ জুন। এভাবে রোস্টার করা হয়েছে। প্রত্যেক এমপি নির্ধারিত তারিখে আসবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে তিন দিন পরপর এমপি-মন্ত্রীদের করোনা টেস্ট করানো হবে। দেশে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব এমপি-মন্ত্রীকে সংসদে যেতে হবে তাদের এই টেস্টের ফল দেখিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে হবে।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘রোস্টার অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে যোগ দেবেন।’
১২ কার্য দিবসে যা থাকছে: ২ জুন সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। এদিন বিকেল ৫টায় অধিবেশন শুরু হবে। ২ জুন বুধবার, ৩ জুন বৃহস্পতিবার, ৬ জুন রোববার, ৭ জুন সোমবার, এরপর বিরতি দিয়ে ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার, ২৮, ২৯, ৩০ সোমবার থেকে বুধবার এবং ১ জুলাই বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠক বসবে।
২ জুন বিকেল ৫টায় অধিবেশন শুরু হওয়ার পর শোক প্রস্তাব, আলোচনাও গ্রহণ করা হবে। এরপর সংসদ মূলতবি হবে। পরদিন বিকেল ৩টায় বাজেট উত্থাপন ও অর্থ বিল উত্থাপন করা হবে। এরপর থেকে প্রতিদিনের কার্যদিবস বেলা ১১টায় শুরু হবে।
৬ জুন রোববার কমিটির বিল সম্পর্কিত রিপোর্ট উত্থাপন (যদি থাকে), চারটি বিল উত্থাপন এবং সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হবে। ৭ জুন সোমবার সম্পূরক বাজেটের আলোচনা ও পাস এবং নির্দিষ্টকরণ সম্পূরক বিল পাস হবে।
এরপর ১৪, ১৫, ১৬, ১৬ ও ২৮ জুন মূল বাজেটের ওপর আলোচনা হবে। ২৯ জুন মূল বাজেটের সমাপনী আলোচনা এবং অর্থবিল পাস, ৩০ জুন বুধবার মূল বাজেট পাস ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস, ১ জুলাই বৃহস্পতিবার প্রশ্নোত্তর পর্ব, বেসরকারি বিল উত্থাপন, সরকারি বিল পাস এবং অধিবেশনের সমাপ্তি হবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। বিরোধীদলের নেতারাও বক্তব্য রাখবেন।
উল্লখ্যে, গত ১১ মে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২ জুন (বুধবার) বিকেল ৫টায় দেশ জাতীয় সংসদ ভবনের সংসদ কক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশন আহ্বান করেন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অধিবেশন আহ্বান করেন।
আরবিসি/০১ জুন/ রোজি