আরবিসি ডেস্ক : কর রেয়াত সুবিধায় ব্যক্তিশ্রেণির একজন করদাতা দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে আসছে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তা কমিয়ে এক কোটি টাকা করা হচ্ছে। পাশাপাশি কমানো হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম করহারও। এই হার দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে দশমিক ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আসন্ন ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এমন ঘোষণা দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছয় লাখ কোটি টাকার বেশি প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা কমানো হচ্ছে। এটি দেড় কোটি টাকা থেকে কমিয়ে এক কোটি টাকা করা হবে। অর্থাৎ একজন ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার এক কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগকে
রেয়াতযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হবে। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রসহ ৯ খাতে বিনিয়োগ এবং ১৩ খাতে দান করলে কর রেয়াত পাওয়া যায়। এসব খাতে একজন করদাতার মোট বার্ষিক আয়ের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দান রেয়াতযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। এর বেশি বিনিয়োগ বা দান করলে অতিরিক্ত অংশের জন্য রেয়াত পাওয়া যাবে না।
যেসব খাতে কর রেয়াত পাওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে- সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার, স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড বা ডিভেঞ্চার ক্রয়; জীবনবিমার প্রিমিয়াম; সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ভবিষ্যৎ তহবিলের চাঁদা; স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাঁদা; কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠীবিমার তহবিলে চাঁদা; সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ; বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার এফডিআর এবং সুপার অ্যানুয়েশন ফান্ডে চাঁদা।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক লেনদেনের ওপর ন্যূনতম কর আরোপ করা হয়। ব্যবসায় লাভ বা লোকসান যা-ই হোক না কেনো এ কর ব্যবসায়ীদের দিতেই হবে। ন্যূনতম করকে আয়কর অধ্যাদেশের মূলনীতির পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে।
বর্তমানে যেসব ব্যবসায় বছরে তিন কোটি টাকা বা এর বেশি পণ্য বিক্রি হয়, তার ওপর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ ন্যূনতম আয়কর আরোপিত আছে। তবে পণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত শিল্পের ক্ষেত্রে উৎপাদন শুরুর পরবর্তী প্রথম তিন বছর ন্যূনতম কর হার দশমিক ১০ শতাংশ। এর বাইরে মোবাইল অপারেটরদের লাভ-ক্ষতি নির্বিশেষে টার্ন ওভারের ওপর ২ শতাংশ এবং তামাক প্রস্ততকারক কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম কর হার এক শতাংশ।
আগামী বাজেটে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম করহার দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ করা হবে। তবে মোবাইল অপারেটর ও সিগারেট, বিড়ি, চুষে খাওয়ার তামাক, ধোঁয়াবিহীন তামাক বা অন্যসব তামাক প্রস্ততকারক কোম্পানির ন্যূনতম কর আগের মতোই থাকছে।
এছাড়া খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাই এ খাতে বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
আরবিসি/৩০ মে/ রোজি