বিশেষ প্রতিবেদক : উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে অবাধে মানুষের চলাচলের কারনে রাজশাহী অঞ্চলে থামছে না করোনার থাবা।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর থেকে রবিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও আইসিইউতে তারা মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে শুক্রবার নতুন আরও ১৩ জনের শরীরে ভারতে উদ্ভূত ধরনটির সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এরমধ্যে চাপাইনবাবগঞ্জের ৭ জন রয়েছে। এই সাতজনেরই ভারত ভ্রমণের ইতিহাস নেই। তারা স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে শনাক্ত সাতজনের পাঁচজনই পুরুষ। পুরুষ পাঁচজনের মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠজনের বয়স ১৩ বছর। একজনের বয়স ৩০ বছর, আরেক জনের বয়স ২১ বছর। বাকি দুজন হলো ৫২ বছর বয়সী এবং ২৭ বছর বয়সী। দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত সোমবার থেকে সেখানে সাতদিনের ‘লকডাউন’ চলছে। তবে ঘরে রাখা যাচ্ছে না মানুষকে।
লকডাউন উপেক্ষা করে ঘর ছেড়েছেন সেখানকার হাজারও মানুষ। লকডাউন ঘোষণার পরে তিন-চার দিনে রাজশাহী-ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে এসেছেন শত শত মানুষ। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন উপায়ে রাজশাহীতে এসেছেন। এ নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন রাজশাহীর মানুষ।
তারা বলছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর লকডাউন উপেক্ষার মাশুল দিতে হতে পারে আশেপাশের জেলাগুলোকে। চাঁপাইবাসীদের ঘরবন্দি না করা গেলে লকডাউন কোন কাজে আসবে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এদিকে রাজশাহী বাসস্ট্যান্ডে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা এক ব্যক্তি জানান, ‘হারা চুরি-বাটপারি করে আইনু। কি করবো কহেন? হারগে তো খ্যাতে হবে। কাজের ল্যাগি আইনু। হারা তো রাজশাহীতে থ্যাকবো না, বাসের জন্যে রহে আছি।’
তাদের ভাষ্যমতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দুরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই পথ হেঁটে তারা চলে আসছেন। সকালে পুলিশ ডিউটিতে আসার আগেই তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে মাঠের মধ্য দিয়ে পৌছে যাচ্ছেন রাজশাহী নগরে। সেখান থেকে বিভিন্নস্থানে চলে যাচ্ছে। অনেকে থেকে যাচ্ছেন রাজশাহী নগরে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, সর্বশেষ শুক্রবার পুর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিমান্ত দিয়ে মোট ৮২ জন দেশে প্রবেশ করেছে। এরমধ্যে দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়ার শনাক্তের হারে ৫৯ শতাংশ। যারা ভারত থেকে দেশে এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরবিসি/৩০ মে/ রোজি