আরবিসি ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ ভারতে চলে গেলেও বাংলাদেশে এর প্রভাব রয়েছে। এ কারণে আগামী দু’দিন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে পশ্চিম অংশে ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হলেও এর প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোতে দেখাতে বলা হয়েছে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে। গত দু’দিন ধরে সব বিভাগেই বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াস চলে গেলেও এর প্রভাব থাকবে আরও দুদিন। এ সময়ে বৃষ্টি হবে, বিশেষ করে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিটা বেশি হবে। সঙ্গে থাকবে ঝোড়ো বাতাস। তবে দেশের পূর্বাংশে ঝড় বৃষ্টিটা কম থাকবে। দু’দিন পর ঝড়-বৃষ্টি অনেকটাই কমে আসবে।’
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আরও ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এবং উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার (২৬ মে) মে দুপুর ১২টা থেকে তিনটার মধ্যে ভারতের ডামরার উত্তর এবং বালাশোরের দক্ষিণ দিক দিয়ে ভারতের উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করে। এটি পরবর্তী সময়ে স্থলভাগের উপর দিয়ে আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে প্রথমে প্রবল ঘূর্ণিঝড়, পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড় এবং গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ভারতের ওড়িশা ও কাছাকাছি ঝাড়খন্ড এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি স্থলভাগের উপর দিয়ে আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যেতে পারে।’
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে আবহাওয়া অধিদফতরের সতর্কবার্তায়।
দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্রগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের উপর দিয়ে একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
বুধবার সকাল ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত সব বিভাগে বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে খুলনার মোংলায়। মোংলায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এ সময়ে ঢাকায় সামান্য বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আরবিসি/২৭ মে/ রোজি