আরবিসি ডেস্ক : করোনার মধ্যেও ঈদের আগে-পরে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো আয় অনেক বেড়েছে। চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে ১৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। গত বছরের পুরো মে মাসে এসেছিল ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
ঈদের আগে ৯ থেকে ১২ মে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। আর ঈদের পরে ১৬ থেকে ২০ মে এ ৫ দিনে এসেছে ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
এতে বলা হয়েছে, পুরো এপ্রিলে প্রবাসীরা ২০৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের আয় দেশে পাঠিয়েছিল, যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি। গত বছর এপ্রিলে দেশে ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে এক ধরনের মন্দাভাব চললেও বিদেশ থেকে প্রবাসীরা বেশি করে আয় পাঠাচ্ছেন। তাদের বেশিরভাগই দুর্দিনে দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে যা আয় করেন সবই পাঠিয়ে দেন। এ কারণে দেশে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে। অনেক ব্যাংকার বলছেন, ঈদের সময়টাতে বিদেশ থেকে জাকাতের টাকা এসেছে। আবার কেউ কেউ অনুদানও পাঠিয়েছেন। এ কারণে ঈদের আগে ও পরে ভালো আয় এসেছে। প্রবাসী আয় বিতরণে এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে বিদেশ থেকে দেশে আসা অর্থ বিতরণ আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। করোনার কারণে বিদেশে যাতায়াত সীমিত হয়ে পড়ায় বৈধ পথেই বেশি আয় আসছে।
প্রবাসী আয়ে সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ায় বৈধ পথে আয় আসা আগের চেয়ে বেড়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ব্যাংক প্রবাসী আয়ে বাড়তি ১ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। আবার ঈদের আগে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকার বেশি প্রবাসী আয় এলে সরকারি ২ শতাংশের সঙ্গে অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রণোদনা মিলেছে। এ কারণে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে ৪৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। এরপরে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। ওই সময়ে ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ১৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ২২ লাখ ডলার এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ২৭ লাখ ডলার। এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে বাকি রেমিটেন্স।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার আয় পাঠান প্রবাসীরা। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।
আরবিসি/২৭ মে/ রোজি