• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন

দেশে টিকা তৈরির সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে

Reporter Name / ১৩৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : দেশে করোনার প্রতিরোধে চীনের সিনোফার্মের টিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। প্রথমবারের মতো এই টিকা দেয়া শুরু হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ রাজধানীর চারটি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ও নার্সদের। কিছু দিন পর্যবেক্ষণের পর এই টিকার প্রয়োগ শুরু হবে তালিকাভুক্ত মানুষদের মধ্যে। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে চীন বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে কয়েক লাখ ডোজ টিকা উপহার দিয়েছে বাংলাদেশকে। ফলে দেশে চলমান টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগে আপাতত আর বাধা থাকল না। উল্লেখ্য, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকার অর্থ পরিশোধসহ লিখিত চুক্তি থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে সরবরাহ করতে না পারায় বাংলাদেশের কাছে বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ ও কেনার কোন বিকল্প ছিল না। সরকার ইতোমধ্যে চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালের গ্রুপ সিনোফার্ম থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা আমদানির বাণিজ্যিক চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। এই টিকার চালান দেশে আসবে আগামী তিন মাসের মধ্যে। এর পাশাপাশি রাশিয়ার তৈরি স্পুৎনিকÑভি টিকা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আমদানির বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এই দুটি দেশ বাংলাদেশে গোপনীয়তা রক্ষার শর্তে টিকা তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছে। তদুপরি সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের। সুতরাং টিকাপ্রাপ্তি নিয়ে আপাতত দুশ্চিন্তা কাটছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীন, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে একটি জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতকেও চীন আমন্ত্রণ জানিয়েছে এই জোটে যোগ দিতে। এর উদ্দেশ্য হলো করোনা মোকাবেলায় জরুরী মেডিক্যাল সেবাদান এবং পরবর্তীতে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং ই-কমার্সের উন্নয়ন। এতে চীনের টিকা পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা পরবর্তীতে তৈরি হবে দেশেই। এর পাশাপাশি চেষ্টা চলছে মেডিক্যাল অক্সিজেনসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহের। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ চলছে একই সময়ে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ টিকা পেয়েছে। টিকা পাওয়া গেছে ১ কোটি ২০ লাখ। নিবন্ধনকৃতদের প্রথম ডোজ চলছে। জুন মাসে আসতে পারে টিকার প্রথম চালান। অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি। সুতরাং অর্থের কোন অভাব হবে না।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোপূর্বে জাতিসংঘ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে করোনার টিকা বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন, যেটি যথার্থ ও সময়োপযোগী। তবে দুঃখজনক হলো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রিপস চুক্তির আওতায় টিকার মেধা সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও দাম নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। ফলে সারা বিশ্বে টিকার সুষম বণ্টন ও যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ হচ্ছে না। টিকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উন্নয়নশীল ও গরিব দেশগুলো। এই মুহূর্তে অন্তত এক শ’ কোটি ডোজ টিকা কিনে নিয়েছে বিশ্বের ৩টি উন্নত দেশ। ফলে বাকি দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে টিকার জন্য হাহাকার, যা কাম্য নয় কোন অবস্থাতেই।

বাংলাদেশে টিকা সরবরাহ ও প্রয়োগ করা হচ্ছে সরকারী ব্যবস্থানায় সারাদেশে। এর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মোকাবেলার জন্য তৈরি হয়েছে নির্দেশিকা।

উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষ সাফল্য রয়েছে, যার স্বীকৃতি মিলেছে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাংক ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক। বাংলাদেশ যথাসময়ে ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকাদানের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে সক্ষম হবে বলে প্রত্যাশা। এক্ষেত্রে বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতও তার প্রতিশ্রুতি তথা চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করবে বলেই প্রত্যাশা। পাশাপাশি বিকল্প দেশ থেকেও টিকা সংগ্রহের পাশাপাশি দেশে টিকা তৈরির সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে। গ্লোব বায়োটেকের দেশীয় টিকাটি নিয়েও অগ্রসর হওয়া যেতে পারে।

আরবিসি/২৭ মে/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category