স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা : একজন শিশু জন্ম গ্রহন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন এবং কোন মানুষ মারা যাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে তাঁর মৃত্যু সনদ পাওয়াটা মানুষের জন্মগত অধিকার। ১৯৯০ সালে যেমন শিশু অধিকার আইন হয়েছে। অনুরুপ ২০০৪ সালে জাতীয় সাংসদে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করার আইন পাশ করা হয়েছে ।
বর্তমানে এই আইনকে শ্রদ্ধা রেখে জন্ম সনদ নেয়ার হিড়িক পড়েছে ইউনিয়ন ও পৌর সভা সমুহে। এ দিক থেকে যারা এই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম সনদ নিচ্ছেন তাদেরকে আকর্ষনীয় পুরুস্কার দিচ্ছেন বাঘার আড়ানী পৌর সভার সফল মেয়র মুক্তার আলী। তাঁর এই পুরুস্কার দেয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার অভিঙ্গ মহল।
জন্ম নিবন্ধন সরকারের জাতীয় নীতিমালা পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এই সেবা গ্রহণের সুযোগ ও গ্রহীতার সংখ্যা নিবন্ধন ব্যবস্থার উন্নয়নে অনেকটায় পিছিয়ে রয়েছে। এক সমিক্ষায় দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মাত্র ৩৭ শতাংশ জন্ম নিবন্ধন হয়েছে। যার মানে দাঁড়ায়, পাঁচ বছরের কম বয়সী এক কোটি শিশু সরকারি হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে। এর ফলে বিভিন্ন সভা সেমিনারের মাধ্যমে এই জন্ম নিবন্ধনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন বর্তমান সরকার। ফলে এই মুহুর্তে বাঘার ৭ টি ইউনিয়ন এবং ২ টি পৌর সভাসহ দেশব্যাপী জন্ম নিবন্ধনের হিড়িক পড়েছে।
বাঘা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মজিবুল আলম বলেন, জন্মনিবন্ধন না থাকলে শিশু শ্রম আর বাল্য বিয়ে থেকে শিশুদের রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরীর ক্ষেত্রে অনেক ভুল-ভাল ধরা পড়ে। এ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানীর শিকার হন। এ ছাড়াও শিশু অপরাধীও জন্ম সনদ ছাড়া শিশু হিসেবে আইনি সুবিধা পাই না। তাঁর মতে, এ সেবাটির ব্যাপারে নারী ও কিশোরী মায়েরা তেমন অবগত নন। জন্ম নিবন্ধন হয়নি এমন শিশুদের পাঁচজন মায়ের মধ্যে মাত্র তিনজন নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানেন। কিন্তু তার পরেও উদাসীনতা শিশুর আইনি সুরক্ষাকে ক্ষতি গ্রস্থ করে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জন্ম নিবন্ধন শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমকে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে পারে। বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন সহজলভ্য করতে ইউনিসেফ কাজ করছে। এ ছাড়াও একজন শিশুকে প্রথম দফা টিকা দেওয়ার সময়ই যেন তার জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নেয়া হয় সে বিষয়টি বাবা-মাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
তিনি বলেন জন্ম নথির বদৌলতে বাল্য বিয়ে, নারী ও শিশু পাচার এবং শিশু শ্রম থেকে বাচ্চাদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। জন্ম সনদের পরিধি পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সফলতা বর্তমান সরকারের। এর ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত হলে কর্তৃপক্ষ যুদ্ধের মতো সহিংস পরিস্থিতি কিংবা অভিবাসনের সময় শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।
আরবিসি/২৭ মে/ রোজি