নূরুজ্জামান, বাঘা : আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাত রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা অধিক হারে আম উৎপাদনে নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন। নতুন এ পদ্ধতিতে আমের উৎপাদনও বেড়েছে। গাছের শিকড়ে এক ধরনের হরমন এবং আমে পলিপ্যাক ব্যবহার শুরু করেছেন। এর ফলে একদিকে যেমন গাছে অধিক হারে আম ধরছে। অপর দিকে আম ফেটে যাওয়া বন্ধ হওয়াসহ কোন প্রকার বালাইনাশক ছাড়া আমের রঙ আকর্র্ষনীয় হয়ে উঠছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমের জন্য রাজশাহীকে বিখ্যাত বলা হলেও আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাত জেলার চারঘাট-বাঘা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ঘিরে। এর মধ্যে মাটির গুনগত কারণে বাঘার আমের সু-খ্যাতি দেশ জুড়ে। এখানকার আম গত তিন বছর থেকে ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে, পর্তুগাল এবং ফ্রান্সসহ রাশিয়াতে পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, গোপাল ভোগ, হিমসাগার,আম্রপালি, ল্যাংড়া এবং ফজলি আম।
এ অঞ্চলের আম চাষী ও বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক, আমোদপুর গ্রামের মহাসিমন আলী ,কলিগ্রামের আশরাফুদৌল্লা এবং বাঘার মুক্তার হোসেন জানান, আমের জন্য বছর নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। এ বছর যেসব গাছে বিপুল পরিমান আম ধরবে, পরবর্তী বছর সে সব গাছে আম কম আসবে। এ জন্য কিছু সংখ্যক ব্যবসয়ী আগ্রীম আম কিনে বাগানে প্রতি বছর আম ভাঙ্গার পর সার প্রয়োগসহ গাছের গোড়ায় পরবর্তী বছরে অধিক আম পাওয়ার আসায় গাছের গোড়ায় মাটি সরিয়ে শিকড়ে হরমন প্রয়োগ করছে।
অপরদিকে আম পাকার পুর্বে গত কয়েক বছর ধরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে আমে পলিপ্যাক (এক ধরনের কাগজের ঠোঙ্গা) জড়িয়ে দিচ্ছে অসংখ্য কৃষক ও ব্যবসায়ী মহল। এতে করে একদিকে যেমন আম ফাটা ও পোকা ধরা বন্ধ হচ্ছে অপর দিকে সাধারণ খোলা আমের চেয়ে এ আমের কালার হচ্ছে চোখে পড়ার মতো।
সার্বিক বিষয়ে বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ্ সুলতান বলেন, আমে পলিপ্যাক ব্যবহারে কোন ক্ষতি নেই। এতে করে আম ভাল থাকে। তবে অধিক আম পাওয়ার আসায় গাছের শিকড়ে হরমন ব্যবহার করা সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ। এতে করে গাছ মারা যাই। এ কেত্রে কোন কৃষক যদি স্বল্প পরিমান হরমন প্রয়োগের পাশা-পাশি বাগানে মরিমিত রাসইনিক ও জৈব সার ব্যবহার করতে পারে সে ক্ষতি হওয়ার সুযোগ কম ।
তিনি বলেন, রাজশাহী মহানগর শহরসহ জেলার ৯ টি উপজেলা মিলে বর্তমানে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে বাঘা উপজেলায় উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে। তাঁরমতে- ঢাকা, ভৈরব, সিলেট, বরিশাল, নরসিংদি, চিটিগং এলাকায় যেসব আমের আড়ৎ রয়েছে সেখানে বাঘার আমের চাহিদা ও দাম অন্য এলাকার চেয়ে অনেক বেশি। কারণ মাটিগত কারণে এ উপজেলার আম অত্যান্ত সুস্বাধু। এখানকার প্রধান অর্থকারি ফসল আম। প্রতি বছর আম মৌসুমে এ অঞ্চলের আম চাষিরা তাদের বাগান বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন ১৩ থেকে ১৪ শ কোটি টাকা।
আরবিসি/২৬ মে/ রোজি