• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

বাড়াতে হবে শিক্ষার মান

Reporter Name / ৪৩২ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : দেশ গত দু’বছর ধরে করোনা মহামারী কবলিত। ফলে লকডাউন-শাটডাউন-সাধারণ ছুটি- যাই বলা হোক না কেন ব্যক্তিগত ও জাতীয় অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নেমে এসেছে প্রায় স্থবিরতা। দৈনন্দিন জীবনে প্রায় প্রত্যেককেই নানা রকম হিসাব নিকাশ করে চলতে হচ্ছে। একদিকে করোনা সংক্রমণের সমূহ ঝুঁকি, অন্যদিকে আয়-উপার্জন গেছে কমে। অনেকের নেই বললেও চলে। টিকতে না পেরে ইতোমধ্যেই শহর ছেড়ে অনেকেই ফিরে গেছেন গ্রামের জীবনে। করোনায় সর্বাধিক বিপর্যস্ত ও বেহাল হয়েছে চাকরির বাজার। সরকারী ও বেসরকারী প্রায় সব নিয়োগ বন্ধ রয়েছে গত দু’বছর ধরে। সরকারী কর্মকমিশন পিএসসির মাধ্যমে প্রতি বছর বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও সেখানেও লেগেছে বিসিএস জট। অন্যদিকে সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকায় তরুণ শিক্ষার্থীরাও পাস করে প্রবেশ করতে পারছে না চাকরির বাজারে। অথচ প্রত্যেকের বয়স বাড়ছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের মতে, দেশে এসএসসি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীদের এক-তৃতীয়াংশ বর্তমানে বেকার। প্রতি বছর চাকরির বাজারে প্রবেশ করেন ২৬ লাখ তরুণ। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান হয়, যার মধ্যে মাত্রা ৪ শতাংশ সরকারী চাকরি। বাকি ৯৬ শতাংশ নির্ভর করেন বেসরকারী সংস্থারগুলোর ওপর। বর্তমানে সেখানেও নিয়োগ প্রায় বন্ধ। ফলে পড়াশোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি চাকরি না পেয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে তরুণ সমাজ। বাড়ছে বেকারত্ব। আপাতত সঙ্কট নিরসনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোসহ সীমিত পরিসরে হলেও বেকার ভাতা, যুব ভাতা চালুর কথা ভাবা যেতে পারে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১০ লাখ এবং নারী ৮ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার। সেক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর অনুপাতে ভারসাম্য বিরাজ করছে। তবে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরো বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ বললেও বাস্তবে এই সংখ্যা অনেক বেশি। তবে মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই তরুণ ও কর্মক্ষম থাকার বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। আরও যা আশার কথা তা হলো, দিনে দিনে বাড়ছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা পৌঁছাবে ৭০ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার এহেন অগ্রগতির খবর প্রকাশিত হয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর (ইউএনডিপি) প্রতিবেদনে। এতে জনসংখ্যার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে, কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগানোর মতো উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভিন্নধর্মী কাজ, কারিগরি দক্ষতা, সৃজনশীল জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে।

পরিকল্পিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের প্রেরিত রেমিটেন্সের সুবাদে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ইতোমধ্যে ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন হচ্ছে। বিদ্যুত উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে বাংলাদেশ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পে দেশের সুখ্যাতি বিশ্বজোড়া। আয়ও অসামান্য। এ খাতে কয়েক লাখ নারীর কর্মসৃজন হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে বিশ্বে। বেড়েছে মাথাপিছু আয়। নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে ২০২৪ সাল নাগাদ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে ধাবমান বাংলাদেশ যা বাস্তবায়ন হবে ২০২৬ সাল নাগাদ। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য দশ শতাংশ অতিক্রম করা। সেটা অতিক্রম করতে হলে ইউএনডিপি উল্লিখিত ৬৬ শতাংশ কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে অবশ্যই। অদক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করতে হবে দক্ষ জনশক্তিতে। জোর দিতে হবে কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের ওপর। বাড়াতে হবে শিক্ষার মান। জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক সৃজনশীল শিক্ষার ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করতে হবে। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের দিকে নজর দিতে হবে। সর্বোপরি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য জোর দিতে হবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের ওপর।

আরবিসি/২৫ মে/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category