স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারার খাঁপুরে বিলসুতি বিলে বাঁধ নির্মাণকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে স্থানীয় কৃষক ও জেলেরা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন। বিলের মৎস্যচাষ প্রকল্পের লোকজন বাঁধ নির্মাণ শুরু করলে অপর পক্ষের বাধার মুখে পড়ে। এই কারণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বাঁধ নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে অভিযোগ করা হয়। তবে চেয়ারম্যান দাবি করেছেন বাঁধ নির্মাণ নয়, পানির প্রবাহের জন্য খাল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বীপপুর ইউনিয়নের খাঁপুর এলাকায় বিলসুতি বিলে মাছচাষের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে এক কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা জমির ওপর দিয়ে ওই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে ফসলি জমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি জলাবদ্ধতা তৈরি হবে। চাষাবাদও ব্যাহত হবে এবং এলাকার মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে পারবেন না। এসব তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র মাছচাষের সুবিধার জন্য বিলের মধ্য দিয়ে বাঁধ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য দুইদিন আগে গত কয়েকটি ভেকু মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) কাজ শুরুু করা হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় মৎস্যজীবী ও কৃষকেরা বাধা প্রদান করেন। এতে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খননকারীরা কাজ বন্ধ রেখে চলে যান। তবে এরপরেও কয়েক দফা তাঁরা খননের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এদিকে বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে স্থানীয় কৃষক ও জেলেরা রাজশাহীর জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অ্যাসিল্যান্ড ও থানার ওসিকে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন, মুনছুর রহমান, মকছেদ আলীসহ অর্ধশত ব্যক্তি জানান, মাছচাষের সুবিধার জন্য বিলসুতি বিলের মাঝখান দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হলে বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এবং শত শত একর জমি অনাবাদি থাকবে। এছাড়াও বিলের নিয়ন্ত্রণ প্রভাবশালীদের কব্জায় গেলে সাধারণ জেলেরা মাছ ধরতে পারবেন না। তাঁরা অভিযোগ করেন, বাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবি জানানোর পর থেকে তাঁদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যেভাবেই হোক তাঁরা বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়াতে এবং তাঁরা প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়াতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান।
বাঁধ নির্মাণের উদ্যোক্তা দ্বীপপুর ইউপি চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বলেন, শুধু মাছচাষ নয়, জলাবদ্ধতা কমানোর জন্য সরকারি জমিতে নিজেদের টাকায় খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এটাকে প্রতিপক্ষরা বাঁধ নির্মাণ বলে প্রচার করছেন। কিছু ব্যক্তি সরকারি খাল ভরাট করে সেগুলো দখলে রেখেছেন। তাঁরাই দখল না ছাড়ার জন্য এর বিরোধীতা করছেন।
বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, বাঁধ নির্মাণে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে পুলিশ সে বিষয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেছে। বাগমারার ইউএনও শরিফ আহম্মেদ বলেন, এই ধরণের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধ নির্মাণ না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরবিসি/২৫ মে/ রোজি