আরবিসি ডেস্ক : প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ বাড়তে পারে। একই সঙ্গে প্রবাসীদের সুবিধাও বাড়তে পারে। এই উদ্যোগ কার্যকর করতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা খাতে এক হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে সরকার রেমিট্যান্সের ওপর দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে। এজন্য চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাজেটে এ খাতে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। আগামী অর্থবছরে তা বাড়িয়ে চার হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠালে বর্তমানে দুই শতাংশ হারে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করারও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। বর্তমানে কেউ ১০০ টাকা রেমিট্যান্স পাঠালে তাকে ১০২ টাকা দেওয়া হয়। আগামীতে তা এক টাকা বাড়িয়ে ১০৩ টাকা দেওয়া হবে। এতে প্রবাসীরা আরও বেশি করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হবে। আর এতে সমৃদ্ধ হবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
আগামী ২ জুন শুরু হচ্ছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। এরপরের দিন ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন। সে সময় তার বক্তৃতায় রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা বরাদ্দ বাড়ানোর ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য সরকার ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর থেকে এ খাতে প্রণোদনা দিয়ে আসছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এ খাতে প্রণোদনা ছিল ৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা। এই অর্থ সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি হিসেবে দেওয়া হয়। প্রণোদনা দেওয়ার কারণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স খাতে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই এ খাতে দেওয়া বাজটে বরাদ্দের সবটুকু ব্যয় হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থ বছর বরাদ্দ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে চার হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিলে প্রবাসীরা ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের এপ্রিলে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল মাত্র ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার। সে হিসাবে এপ্রিলে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রবাসীরা সারা বছরই রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন তবে দুই ঈদকে কেন্দ্র করে দেশে সবসময়ই রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হয়। তবে এবারের প্রবৃদ্ধি অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এর আগে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের একই সময়ে ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল।
রেমিট্যান্সে বড় প্রবৃদ্ধির কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিটেন্সের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা ডলারে ঠেকেছে। রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রণোদনা বাড়াতে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।
আরবিসি/২৪ মে/ রোজি