আরবিসি ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে করা দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মামলার অন্যতম আসামি সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের জীবদ্দশায় করা মামলা বাতিলের আবেদনের রুল খারিজ করে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
বেঞ্চ কর্তৃক এ রায় প্রকাশিত হয়। দুই বিচারপতির সইয়ের পর প্রকাশিত ৬৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশে আদালত বলেছেন, ‘এ মামলায় আসামিদের অপরাধের উপাদান রয়েছে।
জীবদ্দশায় বড়পুকুরিয়া মামলা স্থগিত চেয়ে যে আবেদন করছিলেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আমিনুল হক। তিনি মারা যাওয়ার দুই বছর পর সেই মামলার রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
এ রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, যে কোনো মামলা পুনঃতদন্তের এখতিয়ার আছে দুর্নীতি দমন কমিশনের।
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার ২নং বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। অপেক্ষায় আছে অভিযোগ গঠনের। সাবেক মন্ত্রী আমিনুল হকের নাম বাদ যাবে মৃত্যুর কারণে। খালেদা জিয়াসহ বাকি ৯ জনের বিচার চলবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মৃত), সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (মৃত), সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ (মৃত), এম কে আনোয়ার (মৃত), এম শামসুল ইসলাম (মৃত), ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক (মৃত), একেএম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। মৃতদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার ও এম শামসুল ইসলাম ও আমিনুল হক মারা গেছেন। আর যুদ্ধাপরাধ মামলায় মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তাই তাদের বাদ দিয়ে বাকি আসামিদের বিচার চলছে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলার প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত প্রমাণিত। তবে কার দায় কতটুকু তা ৬ মাসের নির্ধারণ করে মামলা নিষ্পন্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিম্ন আদালতকে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অপরাধীদের যেহেতু প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত উপাদান আছে, অপধাধের কার গুরুত্ব কতটুকু সেটা সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। সেজন্য বিচারিক আদালতকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য একটা নির্দেশনা দিয়েছে।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালে শাহবাগ থানায় এ মামলাটি করে দুদক। আসামি করা হয় খালেদা জিয়া ও তার সরকারের মন্ত্রীদের।
আরবিসি/২৪ মে/ রোজি