স্টাফ রিপোর্টার : একমাস সিয়াম সাধনার পর খুশির ঈদ সমাগত। বুধবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এবার ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অবরুদ্ধ পুরো বিশ্ব। নিরাপত্তার কারণে ঘরবন্দি মানুষ। ঘরে থাকাই এই মুহুর্তে সবচেয়ে নিরাপদ। ভাইরাসে সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাই এবার ঈদের প্রেক্ষাপট হবে ভিন্ন।
ঈদের বড় জমায়েত হবে না। ঈদ কেন্দ্রিক বড় আয়োজন নেই। অনেকটা পারিবারিক আবহেই কাটাতে হবে এবারের ঈদ। পরস্পর থেকে দুরে থাকলেও ভার্চুয়াল জগতে হয়তো ঈদের শুভেচ্ছা আদান প্রদান ও আনন্দ বিনিময়ের সুযোগ থাকছে অবারিত।
ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বড় পরিসরের ঈদ জামাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। যেখানে জামাত হবে সেখানেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঈদে ঘরের বাইরে ঘুরাঘুরি না করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহন। রাজধানী থেকে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে সরকার ও বিশেষজ্ঞরা এই মুহুর্তে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বলা হচ্ছে নিজে এবং পরিবারের স্বার্থেই যে যেখানে আছেন সেখানে অবস্থান করতে। যদিও নানাকৌশলে অনেকে নাড়ির টানে ছুটে গেছেন যার যার ঠিকানায়। এখনও যাচ্ছেন নানাভাবে।
ঈদ উৎসবের অন্যতম অনুসঙ্গ নতুন জামা কাপড়, জুতাসহ ঈদ কেনাকাটা। এবার করোনার কারণে মার্কেট ও বিপনী বিতান বন্ধ থাকায় শুরুতে কেনাকাটা ছিল শূণ্য। শেষ মুহুর্তে বিপনী বিতান খুলে দেয়া হলেও সংক্রমণের ভয়ে খুব একটা কেনাকাটা হয়নি। খুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও অনেক বড় মার্কেট ও শপিং মল ছিল বন্ধ। এছাড়া মানুষের ভিড় বাড়ায় অনেক স্থানে সরকারিভাবেই দোকান পাট বন্ধ করে দেয়া হয়।r
এবাারের ঈদ ভিন্ন এক সুযোগ নিয়ে এসেছে সবার সামনে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির অন্যতম মাধ্যম হতে পারে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে নিজেদের সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া। নিজের ঈদের খরচের একটি অংশ দিয়ে আপনি অসহায় মানুষের দুবেলা খাবার সুযোগ করে দিতে পারেন। ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাড়াতে পারেন নিজেদের সাধ্যমতো।
আজ সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে বৈঠকে বসবে। ওই সভা থেকে বাংলাদেশের আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের ঘোষণা দেয়া হবে।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে মসজিদ ও ঈদগাহে সীমিত পরিসরে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের দিন সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনসমূহে আলোকসজ্জা করা হলেও এবার তা দেখা যাচ্ছে না কোথাও। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো ঈদের আগের দিন থেকে টানা ৭ দিন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের ঘোষণা দিয়েছে। তবে এবারের ঈদের আয়োজন এতোটা আড়ম্বরপূর্ণ নয়। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা প্রতি বছরই প্রকাশ করে। তবে এবার তা প্রকাশ হচ্ছে না।
ঈদের দিন দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, ছোটমণি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আরবিসি/১১ মে/ রোজি