বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা পৌর এলাকায় গত বর্ষা মৌসুমে উপজেলা সদরের রাস্তাঘাট-সহ লোকালয়ের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে পৌর কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন পৌরবাসীকে। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন প্রকল্প। এর মধ্যে পানি নিস্কাশন খাতে ড্রেন বাবদ কয়েকটি প্রকল্পে খরচ দেখানো হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। যার অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে এক পশলা বৃষ্টিতে উপজেলা সদরে থৈ থৈ করছে পানি। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকার জনগণ।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছর পুর্বে বাঘা পৌর সভার মাধ্যমে পোনে ২ কোটি টাকা ব্যায়ে উপজেলার পুরাতন বাসটার্মিনাল থেকে নারায়নপুর পদ্মা নদী পর্যন্ত রাস্তা সহ লোকালয়ের পানি নিস্কাশনের জন্য একটি ড্রেন নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্ত এই ড্রেন দিয়ে কোন পানি নদীতে আজ অবধি প্রবেশ করেনি। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকায় উত্তর দিকের পানি (নদী এলাকা) দক্ষিণে প্রবাহিত না হয়ে দক্ষিন দিকের পানি উত্তরে চলে আসে। এর ফলে রাস্তায় পানি জমা হয়।
এদিকে গত ৬ মাস পুর্বে নারায়নপুর ডরিতলা থেকে গাওপাড়া পর্যন্ত ১ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে আরো একটি ড্রেন নির্মান প্রকল্প বরাদ্দ দেয় বাঘা পৌর কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দলের নেতা এ কাজটি অর্ধেক সম্পন্য করে বাঁকি কাজ ফেলে রেখেছে। এতে করে এলাকার জনসাধারণ ও পথচারিরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
অপর দিকে গত দেড় বছর পুর্বে উপজেলার মুজিব চত্বর থেকে বাঘা বাজারের পুর্বপ্রান্ত পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান করা হয়েছে একটি ড্রেন। এ ড্রেনটি যখন নির্মান করা হয় তখন বিভিন্ন গনমাধ্যমে ড্রেন নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের খবর প্রকাশিত হয়। এই ড্রেনটি বর্তমানে একে বারেই অকেজো অবস্থায় পড়েছে। এর ফলে বাঘা বাজার, বাঘা জিরো পয়েন্ট এবং বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এক পশলা বৃষ্টি হলেই জমছে থৈ-তৈ হাটু পানি। এতে করে রাস্তা পারা-পারে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে জনগন।
বাঘা পৌর এলাকার বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সমাজ সেবক খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন ও পৌর যুবলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান বলেন, পৌর এলাকার সকল ড্রেনগুলো একন অকেজো প্রায়। এর ফলে সাধারণ পথচারী সহ বয়স্ক লোকদের চলাচলে অনেকটাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে এক ঘন্টার বৃষ্টিতে পৌর সদরের রাস্তাঘাট সহ উপজেলা পরিষদ চত্বর এবং শাহদৌল্লা সরকারি কলেজের মাঠে থৈ-থৈ করছে পানি। তারা বলেন, গত বছর বর্ষা মৌসুমের পর পৌর কর্তৃপক্ষ পানি নিস্কাশনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেনর তা এখন পর্যন্ত বাস্তবায় হয়নি। নাম কাওয়াস্তে কোটি-কোটি টাকা ব্যায়ে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ড্রেন নির্মান করা হলেও সেসব ড্রেন দিয়ে পানি বের হচ্ছে না। ফলে ভুগান্তি পোহাচ্ছে পৌর এলাকার জনগণ। অথচ পৌর করের পরিমান আগের চেয়ে দ্বিগুন হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর ফোন রিসিভ করেননি। তবে প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু জানান, কিছু কাজ আগের মেয়র আক্কাস আলীর আমলে বাস্তবায়ন হয়েছে। আমাদের সময় যে গুলো হয়েছে তার অধিকাংশ ড্রেন ব্যাসায়ীরা ময়লা-অবজর্ন ফেলে নষ্ট করছে। তিনি বলেন, আগামি ৩০ তারিখ কয়েকটি কাজের উপর টেন্ডার রয়েছে। এই টেন্ডরের মধ্যে ড্রেস সংস্কার ও নির্মান প্রকল্প ধরা আছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আসাকরি জনগনকে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা।
আরবিসি/১১ মে/ রোজি