স্টাফ রিপোর্টার: দেশে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রথমে লকডাউন এবং পরবর্তীতে কঠোর লকডাউন জারি করার পরও দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং সাথে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে দশ হাজারের কোটা। সংক্রমণের দিক থেকে এরই মধ্যে রাজশাহীকে ঝুঁকিপূর্ণ (উচ্চ সংক্রমণে) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত বছর করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে লকডাউন ঘোষণার পর স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকায় লোকসানের কারণে অনেক বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে দেখা গেছে। এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় করোনার আরও মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশব্যাপী লকডাউনে যখন সাধারণ মানুষের চোখে-মুখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ, তখন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ওষুধপত্র থেকে শুরু করে ইলেক্ট্রনিকস পণ্য পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রায় দেড় হাজার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সহজে এবং বিশ্বস্ততার সাথে কেনাকাটা করা যায় বলে গ্রাহকরা ইতোমধ্যে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশের শীর্ষ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ প্রতিনিয়ত অসংখ্য বিক্রেতাকে যুক্ত করছে অগণিত ক্রেতার সঙ্গে। সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে সম্পন্ন করছে প্রোডাক্ট প্যাকেজিং এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে দারাজের পণ্য। উৎসাহিত করা হচ্ছে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা অনুসরণের জন্য।
করোনায় মানুষের জীবন স্থবির হয়ে পড়লেও চলাচল বেড়েছে বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে; ফলে ঘুরেছে অর্থনীতির চাকা। বাংলাদেশে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা ১০ থেকে ১১ বছরের হলেও ২০২০ সালে এই ইন্ডাস্ট্রির প্রচার এবং প্রসার হয়েছে সব চাইতে বেশি। লকডাউনে ই-কমার্স সাধারন মানুষের জীবনে আর্শীবাদ হয়ে দেখা দিয়েছিল। প্রচলিত পণ্যের বিপরীতে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয় মুদি ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যের। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। করোনার আগে যেখানে প্রতিদিন ডেলিভারির সংখ্যা ছিল এক লাখের কম, সেখানে এখন প্রতিদিন এক লাখ ৭০ হাজার ডেলিভারি হচ্ছে ই-কমার্সে।
করোনা অতিমারিতে অনলাইনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অর্ডারের পাশাপাশি বেড়েছে রেস্টুরেন্টের খাবার অর্ডারের পরিমাণ। অনেকে আবার হোমমেড খাবার নিজস্ব ডেলিভারি ব্যবস্থায় পৌঁছে দিচ্ছে ভোক্তার কাছে। রান্না কিংবা বাইরে যাওয়ার ঝামেলা ছাড়াই স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে ঘরে বসে সহজে রেস্টুরেন্টের খাবার পাওয়া যাচ্ছে বলে ঘরবন্দি মানুষ ঝুঁকেছে অনলাইনে খাবার অর্ডারের দিকে। দিনে ৩ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হচ্ছে এতে, আসছে লাখেরও বেশি অর্ডার। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপদে মানুষের দোরগোড়ায় খাবার পৌঁছে দিচ্ছে দেশের প্রথম খাবার ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান হাংরিনাকিসহ বিভিন্ন খাবার ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান।
ডিজিটালাইজেশনের ফলে গ্রাম থেকে শহরে সকল জায়গায় পৌঁছে গেছে ই-কমার্সের ছোঁয়া। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও পৌঁছে যাচ্ছে দেশীয় পণ্য। দেশের সর্ববৃহৎ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ এই করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সকল স্থানে তাদের সেবা পৌঁছে দিতে যেমন তৎপর, তেমনি প্রতি মাসে বিশ লাখেরও বেশি পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে দারাজ। তাই, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে ঘরে বসে মুদিপণ্য থেকে শুরু করে খাবার পর্যন্ত যেকোন পণ্য হাতে পেতে নির্দ্বিধায় নির্ভর করতে পারেন দারাজের ওপর। আর গ্রাহকের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাবার পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে নিজেদের ব্যবসার চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রেস্টুরেন্টও যথাক্রমে যুক্ত হতে পারেন দারাজ ও হাংরিনাকির সাথে।
আরবিসি /০৯ মে/ রোজি