• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন

রাবিতে নিয়োগ : মানুষের মুখে মুখে আলোচনা

Reporter Name / ১৭৪ Time View
Update : শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে ১৪১ জনকে চাকরি দিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান। রাজশাহীর চার সাংবাদিক, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী, শিক্ষকদের আত্মীয়স্বজনসহ ১৪১ জনকে অ্যাডহকে (অস্থায়ী) শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

সেই নিয়োগকে বৃহস্পতিবার বিকেলেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি নিয়ে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই খবরে ভেঙে পড়েছেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র ও নিয়োগ তালিকায় দেখা যায়, নিয়োগ পাওয়া লোকজনের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন শিক্ষক, ২৩ জন কর্মকর্তা, ৮৫ জন নিম্নমান সহকারী এবং ২৪ জন সহায়ক কর্মচারী। এঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তান, স্ত্রী ও স্বজন, ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতা-কর্মী, সাংবাদিক নেতাসহ চারজন সাংবাদিক রয়েছেন।

তাদের নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ১২ (৫) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিম্নলিখিত প্রার্থীদের তাদের নামের পাশে বর্ণিত পদ ও স্থানে অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহক) অনধিক ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো। এ নিয়োগ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হোক। এ ছাড়া নিয়োগপত্রে বলা আছে, প্রার্থীদের নিয়োগ যোগদানের দিন থেকে কার্যকর হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়েরর উপ-রেজিস্ট্রার মো. মখলেছুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যলয়ে অ্যাডহকে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। ছয় মাস পর যদি ওই ব্যক্তি আবার চাকরি করতে চান, তখন তাঁকে বিশ্ববিদ্যলয়ে আবেদন করতে হয়। বিশ্ববিদ্যলয় বিবেচনা করলে পুনরায় ছয় মাস বাড়বে, আর না বিবেচনা করলে তাঁর চাকরি সেখানেই শেষ।

এদিকে, সদ্য চাকরি পাওয়ারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় চাকরি পেয়ে তারা উপাচার্য আবদুস সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞ। একই সঙ্গে আবার অসন্তুষ্ট। তিনি তাদের নিয়োগকে স্থায়ীভাবে করে দিয়ে যেতে পারেননি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। সেটাও তারা মনে করেছিলেন একসময় উঠে যাবে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা জানতে পারেন, আলাদাভাবে এই ১৪১ জনের নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি ঘোষণা করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জন্য তারা তাদের চাকরি স্থায়ী করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বেশ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তবে কেউ কেউ বলছেন, তাঁদের চাকরি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।

তারা আরও বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাডহকে নিয়োগপ্রাপ্তদের পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নজির রয়েছে। তারা এখন যেভাবেই হোক চাকরি পেয়েছেন। তাদের এখন কাজ হচ্ছে চাকরিকে স্থায়ী করা। এটা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সামনে কে উপাচার্য হবেন, কোন প্রশাসন ক্ষমতায় আসে, তার ওপর নির্ভর করছে মূলত তাদের চাকরি। আপাতত তারা চাকরি পাওয়ার আনন্দে থাকলেও ভেতরে চাপা কষ্ট রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম ফারুকী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা ছিলই। উপাচার্যের বিরুদ্ধেও একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শেষ দিনে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন। এটাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈধ ঘোষণাও করেছে। এভাবে এই প্রক্রিয়ায় চাকরিপ্রাপ্তরা তো ঠিক থাকতে পারে না। তাদের অবশ্যই চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যাপারে নিরাপত্তাহীনতা বা অনিশ্চয়তায় থাকার কথা।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সরকার উপাচার্যের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি মনে করেন।

আরবিসি/০৭ মে/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category