• শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন

ধর্ষণের অভিযোগে মামুনুলের বিরুদ্ধে ঝর্ণার মামলা

Reporter Name / ১৬৭ Time View
Update : শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ এনে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব ও খেলাফত মসলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জান্নাত আরা ঝর্ণা। যদিও মামুনুল হক ঝর্ণাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছিলেন। তবে শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় করা মামলায় ঝর্ণা উল্লেখ করেছেন তিনি মামুনুল হকের স্ত্রী নন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনারগাঁও থানার ডিউটি অফিসার উপ-পুলিশ পরিদর্শক তপন কুমার বাগচী বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে জান্নাত আরা ঝর্ণা বাদি হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধিত ২০০৩ এর ৯ এর ক ধারায় মামলা করেছেন। এটি ধর্ষণের ধারা।’

জান্নাত আরা ঝর্ণা এজহারে উল্লেখ করেন, বিয়ের প্রলোভন ও অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল হক তার সঙ্গে সম্পর্ক করেছেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে মামুনুল করছি, করব বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। ২০১৮ সাল থেকে ঘোরাঘুরির কথা বলে মামুনুল বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে তাকে নিয়ে যান।

ঝর্ণা এজাহারে বলেন, ‘২০০৫ সালে তার স্বামী মাওলানা শহীদুল ইসলামের মাধ্যমে মামুনুল হকের সঙ্গে পরিচয় হয়। স্বামীর বন্ধু হওয়ায় তাদের বাড়িতে মামুনুলের অবাধ যাতায়াত ছিল। মামুনুলের সঙ্গে পরিচয়ের আগে তারা সুখে–শান্তিতে বসবাস করছিলেন। স্বামী-স্ত্রীর মতানৈক্যের মধ্যে প্রবেশ করে মামুনুল হক শহীদুল ও আমার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে থাকেন। মামুনুলের কারণে তাদের দাম্পত্য জীবন চরমভাবে বিষিয়ে ওঠে। সাংসারিক এই টানাপোড়েনে একপর্যায়ে মামনুলের পরামর্শে বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

জান্নাত আরা অভিযোগ করেন, ‘বিচ্ছেদের পর তিনি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েন। এ সময় মামুনুল তাকে খুলনা থেকে ঢাকায় আসার জন্য বলেন। তিনি ঢাকায় চলে আসেন। মামুনুল তাকে তার অনুসারীদের বাসায় রাখেন। সেখানে নানাভাবে তাকে প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে জান্নাত তার প্রলোভনে পা দেন। এরপর মামুনুল জান্নাতকে উত্তর ধানমন্ডির নর্থ সার্কুলার রোডের একটি বাসায় সাবলেট রাখেন। একটি বিউটি পারলারে কাজের ব্যবস্থা করে দেন। ঢাকায় থাকার খরচ মামুনুলই দিচ্ছিলেন।

ঝর্ণা এজাহারে আরও বলেন, ‘৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে ঘোরাঘুরির কথা বলে মামুনুল হক নিয়ে যান। সেখানে অবস্থানকালে কিছু মানুষ আমাদের আটক করে ফেলে। পরে মামুনুল হকের অনুসারীরা রিসোর্টে হামলা করে আমাদের নিয়ে যায়। কিন্তু মামুনুল আমাকে নিজের বাসায় ফিরতে না দিয়ে পরিচিত একজনের বাসায় অবৈধভাবে আটকে রাখেন। কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেননি।’

মামলার অভিযোগে ঝর্ণা বলেন, পরে কৌশলে আমি আমার বড় ছেলেকে আমার দুরবস্থার সব কথা জানাই এবং আমাকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় নিতে বলি। পরে ডিবি পুলিশ আমাকে উদ্ধার করলে জানতে পারি, আমার বাবা রাজধানীর কলাবাগান থানায় আমাকে উদ্ধারের জন্য একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। পুলিশ আমাকে উদ্ধারের পর বাবার জিম্মায় দেয়। সেখানে আমি আমার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে পরামর্শ করায় অভিযোগ দায়ের করতে বিলম্ব হয়।’

ঝর্ণার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নে। তার বাবা ওলিয়ার রহমান। গত ২৪ এপ্রিল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলফাডাঙ্গা থেকে ঢাকায় আনে গোয়েন্দা পুলিশ। ততদিনে ঝর্ণার কোনো খোঁজ কারো কাছে ছিল না। বাবা হিসেবে ২৬ এপ্রিল মেয়েকে উদ্ধারে পুলিশের সহায়তায় চেয়ে কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। ২৭ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদীর ঢাকা সফরকালে হেফাজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে জ্বালাও পোড়াওয়ের মামলায় মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখন তিনি পুলিশি রিমান্ডে আছেন।

আরবিসি/৩০ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category