• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ অপরাহ্ন

দেশে চীন-রাশিয়ার ভ্যাকসিন উৎপাদনে অনুমোদন

Reporter Name / ১০৬ Time View
Update : বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক : ভারত রফতানি বন্ধ করার পর বিকল্প হিসেবে চীন ও রাশিয়া থেকে করোনাভাইরাসের টিকা আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল সরকার। এরপর এ দুটি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য চুক্তিও সই করেছে বাংলাদেশ।

এবার এ দুটি দেশ উদ্ভাবিত করোনার টিকা বাংলাদেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির মাধ্যমে দেশেই উৎপাদনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটি। ফলে দেশে চীন ও রাশিয়ার করোনার টিকা উৎপাদনে সব জটিলতা দূর হলো।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী জানান, আজকের বৈঠকে এ (দেশে চীন ও রাশিয়ার টিকা উৎপাদন) সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যেসব কোম্পানির সঙ্গে ওই দুটি দেশের চুক্তি হবে তারা টিকা উৎপাদন শুরু করবে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে আজকের বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এসব অনুমোদনের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, আজকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কিট ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর কেনাকাটার দুটি প্রস্তাব ছিল। যেহেতু ভারত টিকা রফতানি বন্ধ করেছে তাই বিকল্প সোর্স থেকে টিকা নেওয়ার জন্য আজকের বৈঠকে রাশিয়া ও চীনের দুটি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির টিকা উৎপাদনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে কোন কোন ওষুধ কোম্পানির মাধ্যমে এ টিকা উৎপাদন হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, আপাতত নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে যখন চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির চূড়ান্ত চুক্তি হবে তখন অর্থ ছাড়ের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

ড. শাহিদা আক্তার জানান, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ এবং চীনের সিনো ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২২ এপ্রিল রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য চুক্তি সই করেছিল বাংলাদেশ। তবে দেশটির সঙ্গে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও টিকা কিনবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসে টিকা দিতে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে।

বুধবারের সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্কিত কমিটির অনুমোদনের জন্য তিনটি এবং ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য সাতটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয়ের প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একটি প্রস্তাবনা ছিল। ক্রয়ের প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৮০৮ কোটি ৮৬ লাখ ৮১ হাজার ১৬৪ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে এক হাজার ৭৯২ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ১৬ কোটি তিন লাখ ৪৫ হাজার ৩১৮ টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি পাঁচটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। মালয়েশিয়ায় সরকার পরিবর্তনের কারণে দুটি প্রস্তাবে সে দেশের সরকার অনুমোদন দেয়নি বলে জানান ড. শাহিদা।

 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশর স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা’ প্রকল্পের অতিরিক্ত মাটি ভরাটসহ হল/বাসভবন/প্রশাসনিক ভবন, অন্যান্য অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট ইত্যাদি নির্মাণ কাজের ৩৬টি অঙ্গের ক্রয় কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) মাধ্যমে আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট এবং পিসিআর ল্যাব কনজ্যুমেবলস সরাসরি ক্রয় এবং সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃক নোয়াখালী জেলার হাতিয়ায় ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হেভি ফুয়েল ওয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে দেশ এনার্জির সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদে চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৩৯৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিগনালিংসহ ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ভেঞ্চারে ভারতের এভেরা অ্যাসোসিয়েশন আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং কন্ট্রাকশন এবং আয়েশা ইন্টোনেরিয়া ইক্যুইপমেন্ট মেয়াদ ২৪ মাসের পরিবর্তে ৩৬ মাস পর্যন্ত বৃদ্ধিজনিত কারণে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১৬ কোটি ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩১৮ টাকার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদফতরের পক্ষ থেকে ‘নরসিংদী জেলা কারাগার নির্মাণ’ প্রকল্পের লট নং-১(এ) এর পূর্ত কাজ নুরানী কনস্ট্রাকশন কাছ থেকে ৬৭ কোটি ৩০ লাখ ৮ হাজার ৭ টাকায় কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং ‘এক্সপানশন অব ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল’ প্রকল্পের ডব্লিইউ-০১ প্যাকেজের পূর্ত কাজ ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন থেকে ১২৪ কোটি ৩১ লাখ ২ হাজার ৮৩৯ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতায় ‘ঢাকাস্থ উত্তরা ১৮নং সেক্টরের স্বল্প ও মধ্যম আয়ের জনসাধারণের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতাভুক্ত ‘বি ও সি ব্লকে ১৬তলা বিশিষ্ট ১০৪টি ভবন পাঁচ হাজার ৯৭ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার ৭৫৫ টাকায় নির্মাণ কার্যক্রম বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আরবিসি/২৮ এপ্রিল/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category